টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুর ২টার দিকে মির্জাপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এতে ১২ পরীক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে সিফাত নামে একজনকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুরণী গ্রামের লোকজন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
পুলিশ, হামলার শিকার ছাত্র ও এলাকাবাসী জানায়, গত শনিবার কুরণী জালাল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সৌরভ ও সামিউলের সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের কুরণী গ্রামের কয়েকজন ছাত্রের ঝগড়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৌরভ ও সামিউল উপজেলা সদরের পুষ্টকামুরী গ্রামের কয়েকজনকে মোবাইলফোনে ডেকে নিয়ে কুরণী গ্রামের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এতে কুরণী গ্রামের নজরুল শিকদার, উদয় শিকদার, তোষার ও আলামিন আহত হন। পরে গ্রামের লোকজন হামলাকারী দুইজনকে আটক করে পুলিশে দেয়।
এরই জেরে মঙ্গলবার কুরণী জালাল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা মির্জাপুর সরকারি এসকে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মির্জাপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছানোর পর কয়েকজন যুবক তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে পরীক্ষার্থী শান্ত, শিশির, সিফাত, শাকিল, রাহিম, নাদিম, রাব্বি, রোহান, ইসরাফিল, হাসান, ফাহিম ও খালেক আহত হয়।
এ খবর কুরণী গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে মসজিদের মাইকে গ্রামবাসীকে জানানো হয়। মুহূর্তের মধ্যে গ্রামের লোকজন ও শিক্ষার্থীরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কুরণীতে এসে অবরোধ করেন। এতে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এসময় মহাসড়কের উভয়পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার যানবাহন আটকে পড়ে তৈরি হয়।
খবর পেয়ে টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ বিকেল ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে যানচলাচল স্বাভাবিক করেন। এসময় মির্জাপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এস এম মনসুর মুসা, মির্জাপুর থানার ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম, ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, পুষ্টকামুরী গ্রামের আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা আগের ঘটনাটি মীমাংসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তারপরও আগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
তিনি বলেন, কুরণী গ্রামের ছাত্র ও অভিভাবকরা ভয়ে আছেন। নিরাপত্তার ব্যবস্থা না হলে তারা আর পরীক্ষা দিতে যাবে না। প্রশাসন যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় সেজন্য হামলার প্রতিবাদে গ্রামবাসী মহাসড়ক অবরোধ করে।
মির্জাপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এস এম মনসুর মুছা বলেন, পরীক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে এসে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে। এ বিষয়ে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আহতদের পরিবার মামলা করবে বলে আমাদের জানিয়েছে।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, অভিযোগ পেলে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এস এম এরশাদ/এমআরআর/এমএস