সাতক্ষীরায় অ্যাম্বুলেন্সে ট্রাকের ধাক্কায় মা ও নবজাতকসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে। বুধবার (১০ মে) বিকেল ৩টার দিকে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের মির্জাপুর শ্মশান এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ট্রাকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খলিষানী গ্রামের আলাউল ইসলামের স্ত্রী তানজিলা খাতুন (৪০) ও তার নবজাতক শিশু কন্যা।
বিকেলে নিহতের তালিকায় যুক্ত হয় তানজিলা খাতুনের বড় জামাতা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের বেলাল হোসেন ডালিম (২৮)। পরে খবর পাওয়া যায় আহতদের মধ্যে খুলনা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া আশাশুনির উজিরপুরের ব্লাড ডোনার তাজিজুল ইসলামও (২৭) মৃত্যুবরণ করেছেন। আর পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগই হয়নি তানজিলা খাতুনের পেটে থাকা আরেক সন্তানের।
পারিবারিক সূত্র জানায়, তানজিলার পেটে জমজ সন্তান ছিল। মঙ্গলবার তিনি একটি সন্তান প্রসব করেন। বুধবার সকাল পর্যন্তও অপর সন্তান জন্মগ্রহণ না করায় তারা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। এক পর্যায়ে তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। খুলনা মেডিকেলে নেওয়ার পথে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের মির্জাপুরে তাদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে একটি তেলবাহী ট্রাকের মুখোমুখি সংর্ঘষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহতসহ অন্তত ৪ জন আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া তানজিলার পেটের বাচ্চাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন>> সাতক্ষীরায় ট্রাক-অ্যাম্বুলেন্স সংঘর্ষে মা ও নবজাতকসহ নিহত ৩
প্রত্যক্ষদর্শী মির্জাপুর স্কুলের শিক্ষক সূর্য কান্ত পাল জাগো নিউজকে জানান, বিকেলে সাতক্ষীরাগামী একটি ট্রাক খুলনাগামী অ্যাম্বুলেন্সটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই অ্যাম্বুলেন্সে থাকা মা ও নবজাতকের মৃত্যু হয়। এসময় অ্যাম্বুলেন্সের চালকসহ অন্তত চারজন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে খুলনা ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ডালিমের। এছাড়া খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ব্লাড ডোনার তাজিজুল ইসলাম।
পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় জাগো নিউজকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আহসানুর রহমান রাজীব/ইএ