বগুড়া ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনের ৩৮ প্রার্থী একযোগে তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এরমধ্যে বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে ১০ জন আছেন। এতে ২৭ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৪ মে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। ওই দিন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ৪২ প্রার্থীর মধ্যে ৩৮ জন তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এরমধ্যে সহ-সভাপতি পদে পাঁচজন, সাধারণ সম্পাদক পদে একজন, অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক পদে একজন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দুজন, কোষাধ্যক্ষ পদে একজন ও সদস্য পদে ২৮ জন প্রার্থী আছেন।
এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে একজন, কোষাধ্যক্ষ পদে একজন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে দুজন তাদের প্রার্থিতা বহাল রেখেছেন।
বগুড়া ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ৩৮ জন তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাধারণ সদস্য পদে আর কেউ প্রার্থিতা করছেন না। ফলে সঠিক সময়ে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মনোনয়ন প্রত্যাহার করা দুজন জানান, ২০ এপ্রিল ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনের জন্য খসড়া ভোটার তালিকা করা হয়। এ নিয়ে আপত্তি প্রকাশের জন্য ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত সময় নির্ধারণ হয়েছিল। কারও আপত্তি না থাকায় ২৮ এপ্রিল চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ দাখিল, বাছাই ও প্রত্যাহারের তারিখ দেয় নির্বাচন কমিশন। ৯ মে মননোয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ৪২ প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপরও ১২ মে রিটার্নিং কর্মকর্তার ভোটার তালিকায় গড়মিলের অভিযোগ এনে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলনকে চিঠি দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুইজন আরও জানান, ভিত্তিহীন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনোরকম কথা না বলেই সরাসরি চিঠি দেওয়ায় সবাই মিলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে কেউ কাউকে প্রভাবিত করেনি।
বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলন জাগো নিউজকে বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা কোনো চিঠি এখনো হাতে পাইনি। তবে কয়েকদিন আগে মোবাইল ফোনে ভোটার তালিকায় গড়মিলের কথা তিনি বলেছিলেন। কেউ একজন, যিনি ক্রীড়া সংস্থা বা ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট কেউ নন তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা তদন্ত করতে বলেছেন। এজন্য নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি।
মিলন আরও বলেন, ক্রীড়া সংস্থা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এ নিয়ে কোনো ঝামেলা সৃষ্টি না করতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অন্যরাও এজন্য মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।
বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে ৩৮ প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। একজন ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে ভোটার তালিকার গড়মিলের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এ নিয়ে সমস্যা হয়েছে কি না জানা নেই। নির্বাচন নিয়ে কোনো সংকট থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও বলেন, ২৭ মে শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ব্যালটে ভোটগ্রহণের কথা আছে। এতে বগুড়া জেলার ১২ উপজেলার ১১৪ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। বগুড়ার জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হয়ে থাকেন।
এসজে/এএসএম