শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে শিক্ষিকার অবহেলায় প্রতিবন্ধী এক শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষা দিতে না পারার ঘটনায় এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত বুধবার (১০ মে) উপজেলা উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজারকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়।
ওই শিক্ষার্থীর নাম নাছিমা। সে এবার সখিপুর সোলাইমানিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে এবার পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা দিতে না পারায় গত ১০ মে (বুধবার) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য নাছিমা ফরম পূরণ বাবদ সহকারী শিক্ষিকা টিউলিজ রহমানের কাছে রশিদের মাধ্যমে টাকা জমা দেয়। পরীক্ষার আগে মাদরাসায় গেলে জানতে পারে তার প্রবেশপত্র আসেনি। তার নামে কোনো টাকা জমা হয়নি। যা কারণে ৩০ এপ্রিল শুরু হওয়া পরীক্ষায় সে অংশ নিতে পারেনি।
এ বিষয়ে নাছিমা জানায়, এক পায়ে সমস্যার কারণে আমাকে চ্যালেঞ্জ নিয়ে চলতে হয়। আমি সখিপুর সোলাইমানিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার পরীক্ষার্থী। মাদরাসার সহকারী শিক্ষিকা টিউলিজ রহমানের কাছে টাকা জমা দিলেও আমার ফরম পূরণ হয়নি। ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েও পরীক্ষা দিতে পারলাম না। এক বছর পিছিয়ে পড়লাম। আমি এর বিচার চাই।
আরও পড়ুন: বেরোবি শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধী এরশাদের করুণ অবস্থা
নাছিমার কৃষক বাবা মজিবল মাঝি বলেন, খুব কষ্ট করে মেয়েকে পড়াশোনা করাইতে চাইছিলাম। অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে দাখিল পর্যন্ত আনছি। শেষে পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা জমা দিয়েও সে পরীক্ষা দিতে পারল না। শিক্ষকদের অবহেলায় এমটা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা টিউলিজ রহমান কলি বলেন, সব শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের টাকা আমি মাদরাসার সুপারের কাছে জমা দিয়েছি। ওই মেয়ের টাকাও জমা দিয়েছি। তবে কেন তার ফরম পূরণ হয়নি সেটা সুপার বলতে পারবে।
মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, এ বছর তার আর পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ নেই। তাকে আগামী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ফরম পূরণের টাকা তৎকালীন সুপার শিক্ষকের কাছে দিয়েছেন। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মতে এগুতে হবে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছে ওই শিক্ষার্থী। কয়েকটি পরীক্ষা হওয়ার পর অভিযোগ পেয়েছি। সে বুঝতে পারেনি বিষয়টি পরীক্ষার আগে আমাদের জানানো উচিত ছিল। তখন বোর্ডে জানিয়ে কিছু ব্যবস্থা করা যেত। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ওই শিক্ষার্থী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। পরে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আমরা একটি তদন্ত কমিটির গঠন করেছি। প্রতিবেদন পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএইচ/জেআইএম