রঙিন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়ে দুবাইয়ে পাচার হওয়া মেয়েকে (১৩) ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়েছেন তার বাবা-মা। মেয়েকে ফিরে পাবার জন্য প্রশাসনের কাছে আকুতি জানিয়েছেন তারা।
পচার হওয়া ওই কিশোরী নোয়াখালী সদর উপজেলার উত্তর শুল্যকিয়া গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে।
আবুল কালাম জানান, আমি ইটভাটায় কাজ করি। অভাবের সংসারের মেয়ের সব শখ পূরণ করতে পারিনি। তুচ্ছ ঘটনায় বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় আমার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে। অনেক খোঁজ করেও তার সন্ধান পাইনি। পরে জানতে পারি ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করছে সে। গত মার্চ মাসে খবর আসে আমার মেয়েকে পাচারকারীরা দুবাই পাচার করে দিয়েছে। সেখানে মেয়েকে হোটেলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভয়ে ঘরছাড়া মাদরাসাছাত্রীর পরিবার
তরুণীর মা বলেন, অভাবের সংসারে স্বামীর ঘর নেই। বাবার বাড়িতে থাকি। লোক-লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতেও পারি না। মা হয়ে মেয়ের কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। আমার মেয়েকে নাকি সেখানে বিভিন্ন নাইটক্লাবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যেতে না চাইলে নির্যাতন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি তিনি যেন আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
একাধিক স্বজন জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে ওই কিশোরী তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছে। সে কান্নার জন্য কথা বলতে পারে না। দালালের খপ্পরে পড়ে পড়ালেখা করা মেয়ের আজ এ পরিণতি। তাকে উদ্ধারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
আবদুর রহমান নামের ওই কিশোরীর এক প্রতিবেশী জানান, মেয়েটা বাবা-মায়ের ওপর রাগ করে চলে গেছে। কোথায় গেছে কেউ জানে না। এলাকায় শরমে কাউকে বলতেও পারেনি পরিবার। জানতে পারলাম বিদেশে একটা রুমে সেসহ আরও ৩০টা মেয়েকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। তাকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।
নোয়াখালী জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবু ছালেক বলেন, প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে মেয়েটি দুবাই চলে গেছে। সঠিক প্রক্রিয়ায় কোম্পানির ভিসায় গেলে আমরা সহজে ওই কোম্পানিকে ধরতে পারতাম। কিন্তু সে ভ্রমণ ভিসায় যাওয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, যেহেতু কিশোরী এখন বিদেশে, তাই তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে সব সহযোগিতা করা হবে।
ইকবাল হোসেন মজনু/আরএইচ/এমএস