আইন-আদালত

আবারও পেছালো ৭ খুনের সাক্ষ্য গ্রহণ

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের মামলার একটি মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ আবারও পিছিয়েছে। আসামিপক্ষের আইনজীবী সময় প্রার্থনা করলে আগামী ১৪ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছেন আদালত।বৃহস্পতিবার সাত খুনের একটি মমামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটির সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য থাকলেও আসামি পক্ষের সময় প্রার্থনার কারণে আদালত ১৪ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য করেন। সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, বৃহস্পতিবার তারেক সাঈদ, এম এম রানা ও নূর হোসেনের পক্ষে একটি মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটির সাক্ষ্য জেরার দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু তারেক সাঈদের পক্ষের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে রিটের প্রেক্ষিতে সাক্ষী শুনানীর জন্য সময় প্রার্থনা করেন। পরে আদালত আগামী ১৪ মার্চ পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করেন।জানা গেছে, সাত খুনের ঘটনায় গ্রেফতার রয়েছেন ২৩ জন। পলাতক আছেন ১২ জন। ৩ মার্চ সেলিনা ইসলাম বিউটির প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সেদিন তিন আসামির পক্ষে (নূর হোসেন, তারেক সাঈদ ও এম এম রানার) সময় প্রার্থনা করায় ওই ৩ জন ছাড়া উপস্থিত অপর ২০ আসামি ও পলাতক ১২ আসামির পক্ষের আইনজীবীরা বিউটিকে জেরা করেন। তিন আসামির পক্ষের আইনজীবীরা পরে সময় আবেদন করায় ১০ মার্চ পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য্য করেন আদালত।বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আসামি তারেক সাঈদের পক্ষের আইনজীবী সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আশরাফুজ্জামান ও গোলাম কিবরিয়া আদালতকে জানান, ৭ খুন মামলা বাতিল ও অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করা হয়েছে। রিটের নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। তাছাড়া চার্জশীটের পূর্ণাঙ্গ সার্টিফাই কপি এখনও হাতে আসেনি। তাই এখন বাদীকে জেরা করা যাচ্ছে না। সময় প্রয়োজন। পরে আদালত আগামী ১৪ মার্চ শুনানীর দিন ধার্য্য করেন।বাদী পক্ষের আইনজীবী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘নানা অজুহাতে বিভিন্ন আবেদন করে মামলাটি দীর্ঘসূত্রিতা করানো হচ্ছে। এতে করে আসামি পক্ষের লোকজন সুযোগ সুবিধা পাবে। আমরা মামলার সুষ্ঠু বিচার নিয়ে শঙ্কিত।প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে পাঁচ আসামিকে বাদ দেওয়ায় এবং প্রধান আসামি নূর হোসেনের জবানবন্দি ছাড়া অভিযোগপত্র আদালত আমলে নেওয়ায় ‘নারাজি’ আবেদন করেন সেলিনা ইসলাম বিউটি। আবেদনটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জজ আদালতে খারিজ হয়ে গেলে বিউটি উচ্চ আদালতে যান। হাই কোর্টের আদেশে বলা হয়, পুলিশ চাইলে মামলাটির ‘অধিকতর তদন্ত’ করতে পারে এবং ‘হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার’ ধারা যুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারে।গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনো ১২ জন পলাতক রয়েছেন।শাহাদাত হোসেন/এফএ/এবিএস