দেশজুড়ে

দিনাজপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

‘তোকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে, মরার জন্য প্রস্তুত হ। টাকা, সোনা, গহনা কী আছে তাড়াতাড়ি দিয়ে দে।’ কথাগুলো বলেই স্বামী-স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর শুরু করে। এরপর সন্তানের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে সোনা, রুপা, নগদ টাকা, মোবাইল ও আসবাবপত্র নিয়ে যায় ডাকাতরা।

শুক্রবার (২৬ মে) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার আনন্দ সাগর খানকার মোড়ে দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সৈয়দ সালাহ উদ্দিন দিলীপের বাইড়তে এই তাণ্ডব চালায় ডাকাতরা। এ সময় সৈয়দ সালাহ উদ্দিন দিলীপ, তার স্ত্রী তাসমিন নাহার ও বাড়ির কাজের লোক জয়লাল আবেদিনকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করে আহত করে তারা।

একইসঙ্গে ডাকাতরা তার শিশুসন্তান সাফার (৭) গলায় ছুরি ঠেকিয়ে আলমারির চাবি নিয়ে ১১ ভরি সোনা, ৩ ভরি রুপা, নগদ ২০ হাজার টাকা, ৩টি মোবাইল ও কিছু আসবাবপত্র নিয়ে গেছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সৈয়দ সালাহ উদ্দিন দিলীপ জানান, প্রতিদিনের মতো রাত ১১টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত পৌনে ৩টার দিকে তিনি বাড়ির কাজের লোক জয়নাল আবেদিনের গোঙ্গানির আওয়াজ শুনতে পান। এ সময় ঘরের দরজা খুলে বের হয়ে কাজের লোকের ঘরে যাওয়ার সময় তিন-চারজন হাফপ্যান্ট পরা লোক তাকে প্রথমে মাথায় আঘাত করে। এ সময় আরও কয়েকজন এসে তাকে ধরে স্কচটেপ দিয়ে

হাত বেঁধে ফেলে। স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে গেলে স্ত্রী তাসমিন নাহারকে চেপে ধরে স্কচটেপ দিয়ে হাত বেঁধে ফেলে। এরপর বেধড়ক মারধর শুরু করে।

এক পর্যায়ে তারা বলে, ‘তিন লাখ টাকার কন্ট্রাক্ট হয়ে গেছে তোকে মেরে ফেলার জন্য। প্রস্তুত হয়ে নে, তোকে মেরে ফেলবো। টাকা, সোনা কোথায় রেখেছিস বের করে দে।’ বলতে বলতে স্বামী-স্ত্রীকে ঘরের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে ঘরে তাদের শিশু কন্যা সাফার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে আলমারির চাবি চায়। এ সময় সন্তানের জীবন বাঁচাতে দিলীপ নিজেই আলমারি খুলে দেন। তখন ডাকাতরা ১১ ভরি সোনা, ৩ ভরি রুপা, নগদ ২০ হাজার টাকা, ৩টি মোবাইল ও কিছু আসবাবপত্র নিয়ে যায়।

পরে ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বাড়ির কাজের লোক জয়নাল আবেদিন হাসাপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সকালে সৈয়দ সালাহ উদ্দিন দিলীপ ও তার স্ত্রী তাসমিন নাহার হাসাপাতাল থেকে বাড়িতে চলে যান।

সৈয়দ সালাহ উদ্দিন দিলীপ বলেন, মামলার প্রস্তুতি চলছে। রাতের মধ্যেই মামলা দায়ের করা হবে।

এই ঘটনার পর পুলিশ সুপার মো. শাহ্ ইফতেখার আহম্মেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলতাফুজ্জামান মিতাসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে।

কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, এখনো লিখিত এজাহার পাইনি। তবে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।এমদাদুল হক মিলন/এফএ/এএসএম