তথ্যপ্রযুক্তি

জমজমাট আয়োজনে ঢাকা আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত

জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার ঢাকা মহানগর আঞ্চলিক পর্ব জমজমাট আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ। শুক্রবার  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ আঞ্চলিক পর্ব। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ সময় পলক বলেন, বাংলাদেশ নানাভাবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এগিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ২০২১ সালে ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব ইনফরমেশন টেকনোলজির আয়োজন করবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে প্রোগ্রামিংসহ নানা কার্যক্রম নিয়ে তাই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কারণ আগামী দিনের দেশকে এগিয়ে নেবে বর্তমান সময়ের মেধাবীরা। অনুষ্ঠানে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড পিপল অফিসার মতিউল ইসলাম নওশাদ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে রবি সবসময়ই তরুণদের অদম্য শক্তির ওপর ভরসা রাখে। তাদের ভালো করার অদম্য ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা ইতোমধ্যে চালু করেছি বিডিঅ্যাপস ডটকম। এর মাধ্যমে তরুণ প্রোগ্রামাররা তাদের দক্ষতা প্রদর্শন এবং আমাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে নতুন নতুন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে আসার সুযোগ পেয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগীতার অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের এ ধরনের উদ্যোগের সুযোগ করে দিলে তারা দারুন কিছু করতে পারে, আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরাই এর বড় প্রমান। আর শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে এ ধরনের উদ্যোগ দারুন সহায়তা করে। অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি’র (আইআইটি) পরিচালক ড. কাজী মুহাইমিন-আস-সাকিব বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে হলে নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা জরুরি। আমাদের আরো ভালো করার ক্ষেত্রে বেশি বেশি দক্ষ প্রোগ্রামার তৈরি করতে হবে। আর সে উদ্যোগটি স্কুল পর্যায় থেকে শুরু করতে পারলেই সবচেয়ে ভালো। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় কুইজ এবং প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইটি) বিভাগে আয়োজিত কুইজ এবং প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় প্রায় এক হাজার ১০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রোগ্রামিং বিষয়ে চলে প্রশ্নোত্তর ও আলোচনা পর্ব। সকাল ৮টায় শুরু হয়ে প্রতিযোগিতা চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। পরবর্তীতে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দুই ক্যাটাগরিতে ১০০ জন এবং কুইজে তিন ক্যাটাগরিতে ৪০ জন বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। আঞ্চলিক পর্বের পাশাপাশি সারাদেশে প্রতিযোগিতা উপলক্ষ্যে চলছে অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম। সারাদেশে মোট এক হাজার হাইস্কুলে চলবে অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম। এরই অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫০টি স্কুলে অনুষ্ঠিত হয়েছে অ্যাক্টিভিশন।  দেশের হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এর প্রতি আগ্রহী করে তোলা এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য গত বছর থেকে এই আয়োজন শুরু করেছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। প্রতিযোগিতায় প্রোগ্রামিং ছাড়াও আইসিটি কুইজও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৪র্থ সেমিস্টার পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য এবার ১৬টি আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, দেশের ১৬টি শহরে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে কুমিল্লা, টাঙ্গাইলে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব অঞ্চলের বিজয়ীদের নিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। প্রসঙ্গত, জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজনে রয়েছে আইসিটি বিভাগ, প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বাস্তবায়ন সহযোগী বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন), একাডেমিক সহযোগিতায় কোডমার্শাল এবং পার্টনার হিসেবে রয়েছে কিশোর আলো, এটিএন নিউজ ও বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ)। প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানার ওয়েব ঠিকানা www.nhspc.org । এছাড়া ফেসবুক পেজেও বিস্তারিত জানা যেতে পারে www.facebook.com/nhspcbd ।এআরএস/এমএস