দেশজুড়ে

শীতলক্ষ্যায় ভেসে উঠছে শত শত মরা মাছ

নরসিংদীর পলাশে শিল্পকারখানার বর্জ্যে মরে যাচ্ছে এক সময়ের খরস্রোতা শীতলক্ষ্যা। দখল আর দূষণের শিকার হয়ে বিবর্ণ হচ্ছে এ নদীর জীববৈচিত্র্য। নদীতে মরে ভেসে উঠছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সেই মাছ সংগ্রহ করতে নদী পাড়ে ভিড় জমাচ্ছেন শত শত মানুষ।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার চরসিন্দুর ফেরিঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ৩১ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ মাছ মরে ভেসে উঠেছে। রুই, কাতল, বোয়াল, আইড়, পাঙাশ শতাধিক প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠছে। ভেসে ওঠা মাছ সংগ্রহ করতে নদীর তীরে অবস্থান করছেন অনেকে।

হযরত আলী নামের এক জেলে জানান, নদীতে মাছ ধরে আমরা জীবিকা নির্বাহ করতাম। বড় মাছ ধরে নিয়ে বাজারে বিক্রি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন যাপন করতাম। কিন্তু এখন নদী দূষণের কারণে মাছ মরে ভেসে উঠায় আমাদের রুজি-রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। নদীটাকে বাঁচাতে আমরা সরকারের সহযোগিতা চাই।

আরও পড়ুন: শীতলক্ষ্যায় ভেসে উঠছে মাছ ও জলজ প্রাণী 

অপর জেলে শফিকুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহ আগে শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি মহামারি হয়ে গেছে। এ মহামারির কারণে রুই-কাতলা আইড়সহ ১৫-২০ কেজি ওজনের বড় মাছ মরে ভেসে উঠেছে। টনে টনে মাছ মানুষ ধরে নিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, মূলত বর্মি এলাকায় একটি কয়েল ফ্যাক্টরি রয়েছে। সেই ফ্যাক্টরির কেমিকেলের বিষাক্ত পানি সরাসরি নদীতে ফেলে। যার ফলে বিষে বিষক্রিয়ায় নদীর সব মাছ মরে ভেসে গেছে।

অনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া নামের এক দোকানি বলেন, নদীতে শত মানুষ মাছ ধরতে যাচ্ছে। গিয়ে দেখি বড় মাছ মরে ভেসে উঠছে। আর সেই মাছ মানুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পলাশ ও গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলার কারণে মাছ মরছে।

পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল আলম জানান, নদীসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। এ মুহূর্তে শীতলক্ষ্যায় যে ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে সেটা যদি মনুষ্য সৃষ্টি হয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো। আর যদি প্রাকৃতিক সৃষ্টি হয় তাহলে পরিবেশ ও নদী বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মোকাবেলা করবো।

তিনি বলেন, শীতলক্ষ্যার পাড়ে পলাশ-গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্পকারখানা রয়েছে। নরসিংদী অংশের কারখানা গুলোতে শতভাগ ইটিপির ব্যাবহার নিশ্চিতে মনিটরিংয়ের পাশাপাশি আমার আইপি ক্যামেরা চালু করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।

সঞ্জিত সাহা/আরএইচ/জিকেএস