নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার পুঁটিকাবাজারে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে গরু-ছাগলের হাট বসানোর অভিযোগ উঠেছে। বাজারের পাশেই নিষেধাজ্ঞা সাইনবোর্ড টানানো থাকলেও প্রভাবশালীরা তা মানছেন না। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে হাট বসিয়ে হাসিল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে। ওই হাট বন্ধের দাবিতে উপজেলার শ্যামগঞ্জ গরুর হাটের ইজারাদার মো. খোকন মিয়া জেলা প্রশাসক ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়। তবে সেই সাইনবোর্ডের পাশেই চলে গরু-ছাগলের হাট।
লিখিত অভিযোগ ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় পূর্বধলা, শ্যামগঞ্জ, হুগলা ও হিরণপুর এই চারটি বাজারে গরু-ছাগলের হাট বাসানোর অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়নের পুঁটিকাবাজারে একটি প্রভাবশালী মহল স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে গরু-ছাগলের হাট বসিয়ে আসছে। ওই হাট থেকে হাসিলের নামে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়।
পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ গরুর হাটের ইজারাদার মো. খোকন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, অসাধু প্রক্রিয়া অবলম্বন করে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম মণ্ডল ও তার কয়েকজন সহযোগী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গরুর হাট বাসিয়ে অবৈধ হাসিলের নামে চাঁদা আদায় করছেন। চাঁদার টাকার ভাগ নায়েবসহ (সহকারী ভূমি কর্মকর্তা) বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি পেয়ে থাকেন। ওই হাটে ভারত থেকে পাচার করা গরুসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই গরু বিক্রি করা হয়। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
বিশকাকুনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, গত চার বছর ধরে পুঁটিকাবাজারে অবৈধভাবে গরু-ছাগলের হাট বসানো হচ্ছে। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর তাতে বাঁধা দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। অসাধু এক শ্রেণির লোক স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হাটটি পরিচালনা করছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, বাজারের জায়গা-জমি আমারই। আমি হাটের নামে জায়গা লিখে দিয়েছি। প্রশাসন থেকে বন্ধ করে সাইনবোর্ড দিয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমরা নিয়মিত ভূমি অফিসের মাধ্যমে টাকা জমা দিই।
ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. ফজলু মিয়া আকন্দ জাগো নিউজকে বলেন, পুঁটিকাবাজারটি ইজারার আওতাধীন। অবশ্য গরু-ছাগলের হাট বসানোর অনুমোদন নেই। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে খাস কালেকশন আদায় করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জাগো নিউজকে বলেন, খাস আদায় করে টাকা নিয়ম অনুসারে ব্যাংকে জমা দেওয়া হচ্ছিল। গত শনিবার এটি জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বন্ধ করে নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খানস মজলিশ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বাজারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এইচ এম কামাল/এমআরআর/এএসএম