দেশজুড়ে

ভোলায় চাহিদা বাড়ছে সুপারির খোল থেকে তৈরি তৈজসপত্রের

সুপারি গাছের খোল থেকে ওয়ানটাইম প্লেট, বাটিসহ তৈজসপত্র তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন ভোলার তিন যুবক। স্বাস্থ্যকর হওয়ায় বাজারে অন্যান্য প্লেটের তুলনায় এগুলোর চাহিদাও বেশি।

সরেজমিনে জানা গেছে, ইউটিউব দেখে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার জনতা বাজার এলাকায় রিফাত ভুঁইয়া, মো. সোয়েব ও নুরে আরাফাত নামের তিন যুবক সুপারির খোল থেকে প্লেট ও বাটি তৈরি উদ্যোগ নেন। মে মাসে তাদের ব্যবসার যাত্রা শুরু। বর্তমানে তাদের কারখানায় ১৪ ধরনের তৈজসপত্র তৈরি হচ্ছে। এসব তৈজসপত্রের দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

উদ্যোক্তা রিফাত ভূঁইয়া ও মো. সোয়েব জানান, তারা তিনজন মিলে একটি নতুন ব্যবসা করার উদ্যোগ নেন। পরে ইউটিউব দেখে সুপারি পাতার খোল থেকে তৈজসপত্র তৈরি সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তারা মেশিন কিনে কয়েক দিন পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেন। পরে মে মাস থেকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসা শুরু করেন। চরফ্যাশন উপজেলাসহ সাত উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের স্টাফ দিয়ে সুপারির পাতার খোল সংগ্রহ করছেন।

বর্তমানে তাদের কারখানায় দৈনিক ৭০০-৯০০ পিস প্লেট, বাটিসহ ১৪ ধরনের তৈজসপত্র উৎপাদন হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় লাখ টাকার প্লেট ও বাটি বিক্রি করেছেন তারা।

বিভিন্ন এলাকা থেকে ১ টাকা পিস হিসেবে এসব সুপারির খোল সংগ্রহ করেন স্টাফরা। এরপর সেই খোল পানিতে ধুয়ে রোদে শুকাতে হয়। এরপর আবারও বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে স্বাস্থ্যকর করা হয়। তারপর মেশিনে দিয়ে প্লেট ও বাটি তৈরি করা হয়। প্রতি পিস প্লেট-বাটি ৩ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা কামাল ও শরীফ বলেন, ‘তারা যখন প্রথম এ কারখানা শুরু করেন তখন আমরা স্থানীয়রা তাদের নিয়ে অনেক হাসাহাসি করেছি। কিন্তু যখন তারা সুপারির খোল নিয়ে এসব বানাতে শুরু করলো তখন আমরা অবাক হয়েছি। তাদের এ উদ্যোগের প্রশংসা করতে হয়।’

স্থানীয় সুপারি বাগানের মালিক আব্দুল মন্নান জানান, তার প্রায় দুই একর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে। আগে সুপারির বাগানের পাতা পড়ে গিয়ে নিচেই নষ্ট হতো। কিন্তু এখন কারখানা হওয়ায় ঝরে পড়া সুপারির খোলের মূল্য হয়েছে।

কারখানার ম্যানেজার মো. সুমন জানান, কারখানাটি হওয়ায় তার মতো অনেকের চাকরি হয়েছে। এমন কারখানা জেলায় আরও হলে অনেক বেকারের কাজের সুযোগ হবে।

এনরুট গ্রিনারিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান তরিকুল হক জাগো নিউজকে বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এসব উদ্যোক্তাকে কম খরচ ও সহজ কিস্তিতে মেশিন দিচ্ছেন। তাদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ক্রয় করে কোম্পানির পক্ষ থেকে বাজারজাতও করছেন তারা।

চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল-নোমান বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা রিফাত, সোয়েব ও নুরে আলম একটি ব্যতিক্রমী ব্যবসা করছেন। বাজারে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। ব্যবসা করতে যদি তাদের ব্যাংক ঋণের প্রয়োজন হয় তাহলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, সুপারির খোল দিয়ে তৈরি তৈজসপত্রের দেশ ছাড়া বিদেশেও চাহিদা রয়েছে। এসব পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

এসআর/জিকেএস