দেশজুড়ে

লক্ষ্মীপুরে স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে স্ত্রীকে হত্যায় কামাল হোসেন (৩০) নামের এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২১ জুন) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকেই আসামি কামাল পলাতক। রায়ের সময়ও তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

দণ্ডপ্রাপ্ত কামাল হোসেন রামগতি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর সেকান্দর গ্রামের মৃত আবদুল মালেক মাঝির ছেলে।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন কামালের বোন নাজমা বেগম (৩৩), মা আয়েশা বেগম (৬৩) ও ভাই মো. বাবুল (৩৮)।

মামলার এজাহার সূত্র জানায়, নিহত মাসু বেগম (২৫) কমলনগর উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের চরলরেন্স গ্রামের মৃত আবুল কালামের মেয়ে। ২০১৩ সালে মাসুর সঙ্গে কামালের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তাহছিন ও তাহমিন নামের দুই ছেলে রয়েছে। এরমধ্যে কামাল আরও দুই বিয়ে করেন। এতে মাসুর সঙ্গে তার দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। এতে কামাল তাকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে।

২০২০ সালের ১২ আগস্ট মাসু তার শ্বশুরবাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়েছেন বলে পরিবারের কাছে খবর পাঠানো হয়। তবে ঘটনাস্থল গিয়ে কাউকে পাননি মাসুর স্বজনরা। শিশু তাহছিন ও তাহমিনকে মায়ের মরদেহের পাশে রেখে সবাই পালিয়ে যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে মাসুকে হত্যা করা হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এ ঘটনায় একই বছর ২৩ অক্টোবর মাসুর মা বিবি ছায়েরা (৫৮) বাদী হয়ে রামগতি থানায় কামালসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এতে ২-৩ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগতি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান তপাদার ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এতে কামাল, তার মা আয়েশা বেগম, বোন নাজমা বেগম ও ভাই মো. বাবুলকে অভিযুক্ত করা হয়। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার বাদী বিবি ছায়েরা বলেন, ‘মাসুকে হত্যার সঙ্গে খালাসপ্রাপ্ত আয়েশা, নাজমা ও বাবুলও জড়িত ছিল। রায়ে তারা খালাস পেয়েছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।’

কাজল কায়েস/এসআর/জিকেএস