টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় সুনামগঞ্জের ২০ লাখেরও বেশি মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এতে যেমন সীমান্তের তিন লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ার শঙ্কায় পড়েছেন তেমনি চরম বিপাকে পড়েছেন জেলার গবাদিপশু লালনপালন করা খামারিরা।
জানা যায়, ঈদুল আজহা কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জের তিন হাজারের বেশি খামারি স্বপ্ন বুনেছিলেন। তাদের আশা ছিল, কোরবানি উপলক্ষে গৃহপালিত পশু বিক্রি করে এবছর লাভের মুখ দেখবেন। কিন্তু টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বাড়ায় সেই স্বপ্নে এখন ভাটা পড়েছে।
তাদের মধ্যে একজন সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দা কাউছার আহমেদ। চলতি বছরের ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২০টি গরু লালনপালন করেছেন। আশা ছিল, গরুগুলো ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হবেন। কিন্তু তার সেই স্বপ্নে গুড়েবালি। উজানের পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় তিনি এই গবাদিপশু নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন।
কাউছার বলেন, গত বছরের ভয়ানক বন্যায় খামারের ৯টি গরু মাত্র তিন লাখ টাকা বিক্রি করতে হয়েছে। এই বছরও গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছি।
চলতি বছরে সুনামগঞ্জে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে ৫০ টিরও বেশি গরু-ছাগলের হাট বসার কথা রয়েছে। কিন্তু এরইমধ্যে শতাধিক হাওরে ঢলের পানিতে টইটুম্বুর হয়ে যাওয়ায় গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
খামারি আরশ মিয়া বলেন, খুব চিন্তায় আছি। নদীর পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে গবাদিপশু কীভাবে হাটে তুলবো সেই চিন্তায় আছি।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি বাড়ায় এবং বন্যার শঙ্কা থাকায় এরইমধ্যে সব উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
তিনি জানান, এবছর সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাটে গরু-ছাগলসহ মোট ৪০ হাজার গবাদিপশু উঠবে। যার বাজার মূল্য ৪০০ কোটি টাকা।
লিপসন আহমেদ/এমআরআর/এএসএম