দেশজুড়ে

যমুনার ভাঙনে বিলীন স্কুলভবন

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। নদীতে বিলীন হয়ে গেছে স্কুল, বসতবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি। ভিটেমাটি আর বসতবাড়ি হারিয়ে অসহায় নদীতীরের মানুষ।

শনিবার (১ জুলাই) সকালে আকস্মিকভাবে চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চর সলিমাবাদ গ্রাম সংলগ্ন সলিমাবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এ সময় স্থানীয় শতশত মানুষ তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের চোখের সামনে নদীগর্ভে বিলীন হতে দেখেও রক্ষা করতে পারেননি। এতে পিছিয়ে পড়া চরাঞ্চলের মানুষের প্রায় দুই শতাধিক সন্তানদের পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিদ্যালয়টি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার মধ্যে হলেও সীমান্তবর্তী হওয়ায় চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চর সলিমাবাদ গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় এটি।

আরও পড়ুন: মধুমতির ভাঙনের মুখে স্কুলভবন

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ জাগো নিউজকে জানান, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গত বছর ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০ ফুট লম্বা একতলা ভবনটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ভবনটি নদীগর্ভে চলে গেছে। এর আগে রোববার পুরাতন ভবনটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ে পাঠদান করার মতো আর কিছু রইলো না। তবে ঈদের কারণে এ মাসের ৯ জুলাই পর্যন্ত বিদ্যালয় ছুটি রয়েছ। ছুটি শেষে অন্যত্র খোলা আকাশের নিচে পাঠদান শুরু হবে।

জেলার নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীদুল ইসলাম অপু জাগো নিউজকে বলেন, যমুনার ভাঙন কিছুতেই রোধ করতে পারছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শতশত মানুষ।

এদিকে চলতি বছরের ২ জুন চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া হতে চর সলিমাবাদ পর্যন্ত নদীতীর সংরক্ষণ বাঁধের কাজ শুরু হয়। এর উদ্বোধন করেন পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। তবে উদ্বোধনের ১৩ দিনের মাথায় নির্মাণাধীন বাঁধ এলাকা থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগে দুই শ্রমিককে কারাদণ্ড ও বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন স্থানীয় প্রশাসন। ফলে এ অংশে ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। অপরদিকে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের অপসারণ দাবিতে ১৫ ও ১৭ জুন এলাকাবাসী ওই বাধ নির্মাণ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন।

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমি বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করিনি।

এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, যমুনায় পানি বাড়ার ফলে চৌহালী এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। তবে এ ভাঙন রোধে দ্রুত কাজ শুরু করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এম এ মালেক/আরএইচ/জেআইএম