আইন-আদালত

দুদকের প্রতিবেদন জমার বিষয়ে শুনানি ৯ আগস্ট

খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে অনুসন্ধান কাজ সম্পন্ন করেছে দুদকের অনুসন্ধান টিম। এখন কমিশন এ বিষয়ে পর্যালোচনা করবে। এরপর ওই প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে। সেজন্য সময় চেয়েছিলেন দুদকের আইনজীবী। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৯ আগস্ট দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আাদলতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। আর রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

এর আগে, সালাম মুর্শেদীর সেই বাড়ি নিয়ে অনুসন্ধান সম্পন্ন করে দুদকের অনুসন্ধান টিম। এখন কমিশন এ বিষয়ে পর্যালোচনা করবে। দাখিলের জন্য এফিডেভিট করা দুদকের এক নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

নথির তথ্য অনুসারে, ওই বাড়ি নিয়ে অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপ-পরিচালক মো. ইয়াছির আরাফাতকে টিম লিডার করে ও উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তারের সমন্বয়ে দুই সদস্যের টিম গঠন করা হয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্দেশনা পাওয়ার পর তারা অনুসন্ধান শুরু করেন। এরই মধ্যে অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করা হয়েছে, যা কমিশনের পর্যালোচনাধীন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, কমিশনের সাপ্তাহিক সভায় অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এরপর বিবেচনা করবেন সদস্যরা।

আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে গুলশানের ওই পরিত্যক্ত বাড়ি দখলে নেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর বাড়ির সব নথি তলব করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে ১০ দিনের মধ্যে হলফনামা আকারে নথি দাখিল করতে বলা হয়।

এছাড়া সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে পরিত্যক্ত সম্পতির ‘খ’ তালিকাভুক্ত বাড়িটি বেআইনিভাবে দখল করার অভিযোগে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চান আদালত।

আরও পড়ুন>> সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি: অনুসন্ধান শেষ, প্রতিবেদন প্রস্তুত

এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ঠিক করেন আদালত। পরিত্যক্ত বাড়ি দখলের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গত বছরের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বিষয়ে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

রিট আবেদনে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭-এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন।

রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও গত বছরের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়।

২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেওয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন, রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেওয়ায় ফের ৪ জুলাই চিঠি দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেওয়া হলো, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।

রিটের পর আদালত রুল জারি করে আদেশ দেন। পাশাপাশি আদেশ ও কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া এ মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার প্রচারণা না করতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এফএইচ/ইএ/এএসএম