দেশজুড়ে

জনবল সংকটে নওগাঁর মহিলা বিষয়ক কার্যালয়

দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের কাজের পরিধি। কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি জনবল। মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ে জনবল সঙ্কটের কারণে কোনো কাজই সঠিক সময়ে হচ্ছেনা। ফলে ব্যাহত হচ্ছে কার্যক্রম। জেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলা অফিসসহ অনুমোদিত পদসংখ্যা রয়েছে ৪৫ জন। আর কর্মরত আছেন ৩১ জন। নওগাঁয় ১১টি উপজেলা হলেও সদরে মহিলা বিষয়ক কোনো কার্যালয় নেই। এছাড়া অন্যান্য উপজেলায় প্রয়োজনের তুলনায় জনবল সঙ্কট প্রবল আকার ধারণ করেছে।জেলার আত্রাইতে অফিস সহায়ক, সাপাহারে প্রশিক্ষক, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও অফিস সহায়ক, পত্নীতলায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, পোরশায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, মহাদেবপুরে অফিস সহায়ক, রাণীনগরে প্রশিক্ষক ও অফিস সহায়ক, নিয়ামতপুরে প্রশিক্ষক ও অফিস সহায়ক, বদলগাছীতে প্রশিক্ষক ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এবং ধামইরহাটে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে।এদিকে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে লোকবলের অভাবে কর্যাক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জেলা অফিসে ৬টি অনুমোদিত পদ থাকলেও এর বিপরীতে আছনে ৩ জন। অফিস সহকারী একজন দেড় বছর থেকে, প্রোগাম অফিসার একজন ও অফিস সহায়ক একজনের পদ শূন্য আছে। এছাড়া নওগাঁ সদরে উপজেলা পর্যায়ে অফিসের জন্য ৪ জন কর্মকর্তার প্রয়োজন থাকলেও সেখানে কোনো অফিস নেই। উপজেলা অফিসার, প্রোগাম অফিসার, অফিস সহকারী ও অফিস সহায়কের পদ ফাঁকা আছে। অফিস না থাকায় সম্পূর্ণ কাজ করতে হয় জেলা অফিসে এবং মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকেই সবকাজ সামাল দিতে হয়। এ বিষয়ে বারবার অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা গেছে। উল্লেখিত পদে জনবল সঙ্কট থাকার কথা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিবৃন্দসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারাও সকলেই অবগত আছেন। জনবল সঙ্কটের কারণে এই কার্যালয় থেকে জনগনের সেবা সঠিক সময়ে পেতে অসুবিধা হচ্ছে।বেসরকারি সংস্থা “পল্লী বধু”র নির্বাহী পরিচালক শবনম মোস্তারি কলি জানান, সদরে কোনো অফিস না থাকায় জেলা কার্যালয় থেকে কোনো কাজ করতে গেলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়। যারা উপজেলা থেকে কোনো সংস্থার নামে রেজিষ্ট্রেশন করেন তাদের সুবিধা ও ঝামেলা কম। আর আমাদের জেলা পর্যায়ে রেজিষ্ট্রেশন করতে হয়। এ সময় তিনি সদর উপজেলায় মহিলা বিষয়ক কার্যালয় স্থাপন ও জনবল বাড়ানোর দাবি জানান।অফিসের হিসাব রক্ষক কাম ক্রেডিট সুপারিএনটেন্ড আজিজুল হক জানান, প্রয়োজনের তুলনায় অফিসে জনবল সঙ্কট থাকায় কাজের চাপ বেড়ে গেছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিসের সময় হলেও কাজের চাপ থাকায় রাত প্রায় ৯/১০ টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। চাপ বেড়ে যাওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে অনেকের কাজ দেওয়া সম্ভব হয় না। জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, জনবল সঙ্কট থাকায় প্রতিনিয়ত মানসিকভাবে নির্যাতিত হচ্ছি। প্রধান কার্যালয় থেকে কোনো চিঠি এলে এবং তার উত্তরের জন্য একটু দেরি হলে জবাবদিহীতা করতে হয় এবং শোকজ খেতে হয়। কেন দেরি হলো এটা তারা দেখেন না। জনবল স্বল্পতার কারণে এই কার্যালয় থেকে সঠিক সময়ে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। জনগণের সঠিক সময়ে সঠিক সেবা পেতে অসুবিধা হচ্ছে। এমনকি ছুটির দিনেও কাজ করতে হয়।তিনি আরো জানান, জেলার সব কার্যক্রম মনিটরিং, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে যোগদান, দিবস পালন, দাফতরিক কার্যক্রমের সমন্বয় সাধনা করা একার পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সদরে কোনো অফিস না থাকায়  নিজেকেই দেখতে হয়।এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান জানান, লোকবলের অভাবে কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।আব্বাস আলী/এফএ/আরআইপি