দেশজুড়ে

মির্জাপুরে আ.লীগের মনোনয়ন যেন সোনার হরিণ

১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বংশাই, লৌহজং ও ধলেশ্বরী নদী ঘেরা টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলা। এ উপজেলায় ১৪ ইউনিয়নের মধ্যে এবার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর এ সবকটি ইউনিয়ন পরিষদেই রয়েছেন একাধিক প্রার্থী যারা ক্ষমতাসীন দল আ.লীগের মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান ও নবীন-প্রবীণ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ প্রায় শতাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন মনোনয়ন পেতে। এ যেন নির্বাচনের আগে আরেক নির্বাচন। যে কোনো মূল্যে আ.লীগের মনোনয়ন তাদের চাই। এমন মনোভাব নিয়ে ঢাকায় ও টাঙ্গাইলে গিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছেন এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তাছাড়া স্থানীয় এমপি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেন এলাকায় অবস্থান করলে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের নিয়ে এমপির বাসভবনে অবস্থান করছেন। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন মাধ্যমে লবিং করে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতেরও চেষ্টা চালাচ্ছেন। উপজেলায় আওয়ামী লীগে কোন্দল না থাকলেও পাল্লা বড় করার কৌশল রয়েছে নেতাদের মধ্যে। এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একাব্বর হোসেন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মীর শরীফ মাহমুদ। তাছাড়া এ উপজেলার প্রবীণ নেতা সাবেক সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক ফজলুর রহমান ফারুকের দিক নিদর্শেনা রয়েছে বলে জানা গেছে। তাই এ দলের প্রার্থীরা অনেকটাই দিশেহারা হয়ে সব নেতাদের কাছেই দৌড়ঝাঁপ করছেন। বেশ কয়েকজন প্রার্থীর সঙ্গে আলাপকালে তারা জানায়, যে কোনো মূল্যে যদি ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন নামের সোনার হরিণটি হাত করা যায় তাহলে চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসাটা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে। আর সে কারণে এ দলের মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত বলে জানান। বেশ কয়েকদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা বিভিন্ন স্থানে বৈঠক ও তৃণমূলের মতামত নেয়া শুরু করেছেন। কাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে কি লাভ এবং কি ক্ষতি হতে পারে এ নিয়েও উপজেলার হাইকমান্ড কাজ করছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি ইউনিয়নে একজন করে চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনীত করার লক্ষে পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির সমন্বয়ে বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়েছে।  আগামী ২৩ মার্চ সকালে উয়ার্শী, একই দিন বিকেলে ভাতগ্রাম, ২৪ মার্চ সকালে আনাইতারা, একই দিন বিকেলে বানাইল, ২৯ মার্চ সকালে মহেড়া, বিকেলে জামুর্কী, ৩০ মার্চ সকালে গোড়াই এবং বিকেলে বাঁশতৈল ইউনিয়নে প্রার্থী বাছাইয়ে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। প্রার্থী বাছাইয়ে বৃহস্পতিবার থেকে মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছেন। মনোনয়ন ফরমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫শ টাকা। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৯জন প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর শরীফ মাহমুদ জানিয়েছেন।তবে দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, প্রতিটি ইউনিয়নে মনোনয়ন দেয়ার জন্য ৩ জন করে প্রার্থীর নাম উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জেলা কমিটির মাধ্যমে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। পরে কেন্দ্র থেকে প্রার্থী তালিকা চুড়ান্ত হবে এমনটাই আভাস পাওয়া গেছে।এদিকে এ উপজেলায় বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি ভোটের লড়াইয়ে বরাবরই এগিয়ে থাকে। এবারের ইউপি নির্বাচনেও চমক দেখাতে চায় দলটি এমন তথ্যই এসেছে এ দলের নেতাদের পক্ষ থেকে।জানা যায়, বিএনপির মনোনয়ন পেতে দলের সিনিয়র নেতাদের কাছে প্রার্থীদের তেমন একটা দৌড়ঝাঁপ না থাকলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই দেখেই বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে দলটির পক্ষ থেকে।মির্জাপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর আহমেদ শিকদার বলেন, ২৮মে ৫ম ধাপে মির্জাপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।এফএ/পিআর