দেড় বছর আগে বিয়ে করেন রয়েল (২১)। স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। চলতি মাসেই ঘর আলো করে আসবে নতুন অতিথি। তাই পরিবারের খুশির যেন শেষ ছিল না। কিন্তু সেই আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে এক প্রাণঘাতী রোগে।
ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েল। টাকার অভাবে চিকিৎসাও বন্ধের পথে। বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় চিকিৎসা কিছুটা চললেও আগামীতে কী হবে, তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে রয়েলের পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের টুবিয়া বাজার এলাকার জুলহাস ফরাজী ও খুরশিদা বেগমের মেজ ছেলে জাহিদুল ইসলাম রয়েল। বাবা নদী থেকে মাছ শিকার করে কোনোমতে সংসার চালান। অভাবের সংসারে বাবাকে সহযোগিতা করতে ১০ বছর আগে ঢাকায় যান রয়েল। সেখানে টেইলারিংয়ের কাজ করতেন। সারাদিনতো বটেই, কখনো কখনো সারারাত কাজ করেছেন। যা টাকা পেতেন তা দিয়ে নিজের খরচ মিটিয়ে বাড়িতে বাবা-মায়ের কাছে পাঠাতেন। ভালোই যাচ্ছিল দিন।
প্রায় দেড় বছর আগে কুমিল্লায় বিয়ে করেন রয়েল। স্ত্রী আয়শা বেগম এখন সন্তানসম্ভবা। চলতি মাসেই ডেলিভারির দিন নির্ধারণ রয়েছে। এজন্য পরিবারে আনন্দের শেষ ছিল না। কিন্তু সেই মুহূর্তেই ধরা পরে রয়েলের ক্যানসার। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অসুস্থ রয়েলের বাবা জুলহাস ফরাজী বলেন, ‘আমার এতটুকু ছেলে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত। অবস্থা গুরুতর। সবার সহযোগিতায় এ পর্যন্ত চিকিৎসা করাতে পেরেছি। এখনো আরও সহযোগিতা দরকার। সবাই সহযোগিতা করলে হয়তো আমার ছেলেকে চিকিৎসা করাতে পারবো। তা নাহলে আমি মাছ বিক্রি করে যে টাকা পাই তা দিয়ে সংসারই চলে না; সেখানে চিকিৎসা করানো অসম্ভব।’
রয়েলের স্ত্রী আয়শা বেগম বলেন, ‘জানি না আমার অনাগত সন্তান তার বাবার মুখ দেখতে পারবে কি না। সবার সহযোগিতা কামনা করছি যাতে আমার সন্তান তার বাবাকে দেখতে পায়, বাবার আদর পায়। আমার সন্তান যেন এতিম না হয়ে যায়।’
মাদারীপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ক্যানসার রোগীর জন্য সরকারিভাবে ৫০ হাজার টাকা অনুদানের ব্যবস্থা আছে। অসুস্থ রয়েলের পরিবার সহযোগিতার আবেদন করলে আমরা বিবেচনা করবো।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জিকেএস