পরীক্ষার হলে সহানুভূতিশীল হতে আবেদন জানিয়ে অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর চিঠি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বদরগঞ্জের ২০২৩ ব্যাচের সব শিক্ষার্থীর পক্ষে এ চিঠি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে ডাকযোগে চিঠিটি এসে পৌঁছায়। এরপর এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বদরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে দেওয়া চিঠিটি রেজিস্ট্রি করে পাঠানো হয়েছে। খামের উপরে কোনো নাম না থাকলেও এতে মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে।
অধ্যক্ষকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, প্রথমে সালাম নেবেন। আশা করি ভালো আছেন। আমরা বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি ও বদরগঞ্জ সরকারি কলেজের সব শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলছি। বদরগঞ্জে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র দুটি। আমরা বিগত বছরের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুনে আসতেছি যে উভয় কেন্দ্রেই পরীক্ষার ভিউটি অত্যন্ত কড়া হয়। যার ফলে শিক্ষার্থীরা অনেক আতঙ্কিত থাকে। ডিউটিরত শিক্ষক মহোদয়রা শিক্ষার্থীদের প্রতি কোনো রকম সহানুভূতিশীল হয় না। যার ফলে উভয় কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল অনেক খারাপ হয়। পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণে ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারি না। কঠিন ডিউটির কারণে শিক্ষার্থীরা পারস্পারিক সহযোগিতার কোনো সুযোগ পায় না।
তথাপি পরীক্ষার ফলাফল তুলনামূলক খারাপ হওয়ার কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেলসহ স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগই পাই না। বিগত কয়েক বছর থেকে উভয় কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়নি।
তাই আমরা আপনার সহায়তা কামনা করছি। যাতে পরীক্ষায় ডিউটিরত শিক্ষকরা আমাদের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল হয়। যাতে আমরা বড় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানের গর্বের কারণ হতে পারি।
জানা গেছে, বদরগঞ্জ মহিলা কলেজ, বকশিগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, কুতুবপুর বিএল কলেজ ও মোমিনপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বদরগঞ্জ সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন। এবছর এই কেন্দ্রে ৪৫৮ শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও প্রথম দিনের (বৃহস্পতিবার) বাংলা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৪৫৬ শিক্ষার্থী।
বদরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজেদ আলী খান বলেন, পরীক্ষা শুরুর আগে পোস্ট অফিস থেকে একটা রেজিস্ট্রি চিঠি আমাকে ম্যানশন করে দেওয়া হয়। যাতে প্রেরক হিসেবে বদরগঞ্জের এইচএসসি-২০২৩ সালের শিক্ষার্থীবৃন্দ লেখা।অধ্যক্ষ বলেন, এইচএসসি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। কিন্তু তারা যদি এমন মানসিকতা দেখায় তা দুঃখজনক ও হতাশাজনক। তবে কারা এমন চিঠি দিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ জাগো নিউজকে বলেন, আমি কেন্দ্রে যাওয়ার পর অধ্যক্ষ চিঠিটি আমাকে দেখায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই বয়সে এমন নেতিবাচক চিন্তা আসলে ভবিষ্যতের জন্য আরও বড় ক্ষতির কারণ হবে। যাতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপরে সজাগ এবং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভীতি দূর করতে শিক্ষকসহ অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নিয়মের যেন কোনো ব্যতয় না ঘটে এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জিতু কবীর/এএইচ/জেআইএম