মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র হওয়া সত্ত্বেও গাইনি চিকিৎসকের দেখা মেলা ভার। রয়েছে অন্যান্য লোকবল সংকটও। চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে দেড় যুগ ধরে। সৈয়দপুরের প্রত্যন্ত এলাকার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে এসে ফিরে যেতে হয় রোগী ও তাদের স্বজনদের।
দিন দিন রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম অবস্থা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির। শিগগির ভবন নির্মাণ, অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু, গাইনি চিকিৎসকসহ অন্যান্য লোকবল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়সহ সংশ্লিষ্টরা।
গর্ভবতী মা ও শিশুদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সৈয়দপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। ১০ সজ্জার এই কেন্দ্রটিতে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে যান শতাধিক রোগী। তবে কেন্দ্রটির ভবন পুরোনো আর জায়গা কম হওয়ায় সেবা নিতে যাওয়া লোকজনের ভিড় লেগেই থাকে।
বিশেষ করে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে ১৬ ধরনের সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হচ্ছেন প্রসূতি মায়েরা।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে দুইজন ভিজিটর থাকার বদলে একজন ভিজিটর নিয়মিত গর্ভকালীন চেকাপ করান। কেন্দ্রটিতে নেই কোনো গাইনি চিকিৎসক। ফলে মাতৃত্বকালীন সমস্যা নিয়ে যাওয়া রোগীরা পড়েন বিপাকে।
বর্তমানে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে একজন মেডিকেল অফিসার নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
মনিশা আক্তার নামে এক রোগী বলেন, ‘এখানে একজন গাইনি ডাক্তার হলে ভালো হতো। অনেক মহিলা আছে যে পুরুষদের সামনে সব কিছু খুলে বলতে পারে না। গাইনি ডাক্তার হলে সব কিছু শেয়ার করতে পারবে। এতে করে আমরা ভালো সেবা পাইতাম।’
সুমাইয়া আক্তার নামে আরেকজন বলেন, ‘আমরা মেয়েরা তো ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে আসি। কিন্তু আমাদের সব কথা তো পুরুষ ডাক্তারকে বলা সম্ভব নয়। আমরা তো সব সময় পুরুষদের সাথে যোগাযোগও করতে পারি না আমাদের সমস্যা নিয়ে। একজন গাইনি ডাক্তার দিলে আমরা পরামর্শ নিতে পারবো।’
আরও পড়ুন> ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জনবলে চলছে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ
শওকত ইসলাম নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘অনেকদিন ধরে জেনে আসতেছি এখানকার অ্যাম্বুলেন্সটি অকেজো এবং এখানে ড্রাইভারও নেই। অ্যাম্বুলেন্স থাকলে তো আমরা বিপদে আপদে সেবা নিতে পারবো।’
সৈয়দপুর মা ও শিশু কেন্দ্রের ভিজিটর সেলিনা বেগম বলেন, ‘এটি ১০ সজ্জার হাসপাতাল। এখানে দুইজন ভিজিটরের জায়গায় একজন আছি। একজন আবাসিক মেডিকেল ডাক্তার আছেন। এখানে রোগীর চাপ প্রচুর। রোগীর চাপ সামলানো খুব কষ্টকর।’
সৈয়দপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সোহেল রানা বলেন, এটি মা ও শিশুর স্পেশালিসবচ হাসপাতাল হলেও এখানে সব ধরনের রোগী আসেন। আমরা সব ধরনের রোগীকে সেবা দিয়ে আসছি। তবে আমাদের যেহেতু মায়েদের নিয়ে কাজ করতে হয় সেহেতু একজন গাইনি চিকিৎসক জরুরি।
তিনি আরও জানান, এখানে নরমাল ডেলিভারির সেবা দিচ্ছেন তারা।
সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন নীলফামারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে বিষয়গুলো। খুব দ্রুত সৈয়দপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।
এসএনআর/জিকেএস