নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির ৩০২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ের শুনানিতে আদালত বলেছেন, প্রতিবেদনে স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে। আমরা বিস্তারিত দেখে পরবর্তী আদেশ দেবো। এরপর প্রতিবেদনের শুনানির জন্য ১৬ অক্টোবর দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট।
রোববার (২০ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এদিন দুপুরের পর শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ ও রিটকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনের অনুলিপি নিতে চান।
তখন হাইকোর্ট বলেন, এ প্রতিবেদনে স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে। আমরা এখনো খুলে দেখিনি। বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবো। এজন্য সময় প্রয়োজন। এখন এ প্রতিবেদনের অনুলিপি দেওয়া যাবে না। পরে প্রতিবেদনের অনুলিপি দেওয়া হবে। এরপর আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ১৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার শাখার সচিবের নেতৃত্বে গঠিত আট সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি ৩০২ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেন। গত ১৪ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এর আগে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে কমিটিকে দুই মাস সময় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, এটা সেনসিটিভ ম্যাটার। বারবার সময় দেওয়া হবে না। দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।
গত ১৩ জুন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন। আদালতে সেদিন শুনানিতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
আদালতে তদন্ত কমিটির পক্ষে দুই মাস সময় চেয়ে ওইদিন আবেদন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এভিডেন্স সংগ্রহ করেছে।
এসময় রিটের পক্ষের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক সময় আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, তারা আদালতের আদেশের এক মাস দুদিন পর কমিটি গঠন করেছে। এখানে অনেক সময় ব্যয় হয়েছে। দুই মাস সময় দেওয়া ঠিক হবে না।
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেন, আমরা দুই মাস সময় দিচ্ছি। দুই মাস কিন্তু দুই মাসই। এসময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। এটা সেনসিটিভ ম্যাটার। বারবার সময় দেওয়া হবে না।
পরে আদালত দুই মাস সময় আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁ শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র্যাব। এরপর র্যাব হেফাজতে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২৪ মার্চ সকালে রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এফএইচ/জেডএইচ/জেআইএম