আইন-আদালত

৭ খুন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট কে এম মহিউদ্দিন এর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া আরো কয়েকজনের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে আজ।সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা হতে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে ৭ খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ২৩ আসামির উপস্থিতিতে সাক্ষীদের কয়েকজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এদিকে, সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত রাখতে ষষ্ঠবারের মতো আবেদন করেছেন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন ও চাকরিচ্যুত র্যাব কর্মকর্তা লে.কর্নেল তারেক সাঈদের পক্ষের আইনজীবীরা। তবে আদালত তাৎক্ষণিক এ ব্যাপারে কোন আদেশ দেয়নি।শুনানির শুরুতে আদালতে তারেক সাঈদ ও নূর হোসেনের পক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, ৭ খুন মামলা বাতিল ও অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রিটের নিষ্পত্তি এখনও হয় নি। তাই এখন বাদীকে (সেলিনা ইসলাম বিউটি) ও এ দুইজনের (তারেক সাঈদ ও নূর হোসেন) পক্ষে জেরা করা যাচ্ছে না। সময় প্রয়োজন।আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সোমবার নির্ধারিত সাক্ষ্যগ্রহণের দিন সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। সাক্ষীকে জেরা করছে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।জানা গেছে, ৭ খুনের ঘটনায় গ্রেফতার রয়েছেন ২৩ জন। পলাতক ১২ জন। ৭ খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী বিজয় কুমার পাল (নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা) ও অপর বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি (নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী)।দুটি মামলাতেই অভিন্ন সাক্ষী হলো ১২৭ জন। এ কারণে উভয় মামলার সাক্ষীদের একই সঙ্গে দুই মামলায় জেরা করা হয়।প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে পাঁচ আসামিকে বাদ দেয়ায় এবং প্রধান আসামি নূর হোসেনের জবানবন্দি ছাড়া অভিযোগপত্র আদালত আমলে নেয়ায় ‘নারাজি’ আবেদন করেন সেলিনা ইসলাম বিউটি। আবেদনটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জজ আদালতে খারিজ হয়ে গেলে বিউটি উচ্চ আদালতে যান। হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, পুলিশ চাইলে মামলাটির ‘অধিকতর তদন্ত’ করতে পারে এবং ‘হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার’ ধারা যুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারে।গত ৮ ফেব্রুয়ারি ৭ খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনও ১২ জন পলাতক রয়েছে।শাহাদাত হোসেন/এসএস/এমএস