হলিউড কিংবা বলিউড সিনেমার অ্যাকশনের দৃশ্য নয়, বাস্তবে ভোলার সড়কে বাইক স্টান্ট করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মো. ইমন জমাদ্দার (২৫) নামে এক যুবক। কোনো প্রকার সেফটি ছাড়াই তিনি বাইক স্টান্ট করে যাচ্ছেন।
বেশিরভাগ সময় ভোলা-বরিশাল ও ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের হাইওয়ে সড়কে বাইক স্টান্ট করতে দেখা যায় ইমন জমাদ্দারকে। ইমন যখন বাইক স্টান্ট করেন তখন তা দেখতে সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন স্থানীয়রা।
ইমন জমাদ্দার ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর ইলিশা গ্রামের জমাদ্দার বাড়ির মো. অলি জমাদ্দারের ছেলে। তিনি ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে মজুচৌধুরী হাট টু চট্টগ্রাম রুটের যাত্রীবাহী বাসের টিকিট বিক্রি করেন।
বাইকার মো. ইমন জমাদ্দার জাগো নিউজকে জানান, আগে তিনি ইউটিউবে বিদেশি বাইক স্টান্টের ভিডিও দেখতেন। ওই ভিডিও দেখে বাইক স্টান্ট করার ইচ্ছা জাগে তার। পরে ভিডিওতে বাইক স্টান্টের বিভিন্ন কৌশল তার ভালো লাগতে থাকে। প্রায় এক বছর আগে তিনি তার অ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেল দিয়ে বাইক স্টান্ট করতে শুরু করেন। এরপর তিনি আস্তে আস্তে বেশ কয়েকটি বাইক স্টান্ট করার কৌশল শিখে ফেলেন।
মোটরসাইকেলের ওপর দাঁড়িয়ে দুই হাত ছেড়ে চালানো, দুই হাত ছেড়ে মাথা নিচু করে শুয়ে চালানো, দুই হাত ছেড়ে শুয়ে চালানো, মোনাজাত ধরাসহ ৬-৭টি কৌশলে বাইক স্টান্ট করতে পারেন তিনি। তবে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার সেফটি ছাড়াই বাইক স্টান্ট করে যাচ্ছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, তার বাবা একজন কৃষক। তিন ভাই ও এক বোন তারা। তিনি বাবা-মার তৃতীয় সন্তান। প্রায় ৪ বছর আগে তিনি বিয়ে করেছেন। তার একটি মেয়ে রয়েছে। তিনি প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একটি যাত্রীবাহী বাসের টিকিট বিক্রির চাকরি করেন। এতে প্রতিদিন ৪-৫০০ টাকা পেয়ে থাকেন। ওই টাকা দিয়ে তার সংসার চলে।
যদি চাকরি করতে না হতো তাহলে তিনি প্রতিদিন বাইক স্টান্ট করতেন। আর এতে অনেক কৌশল শিখে ফেলতে পারতেন। তখন তিনি বাংলাদেশের একজন অন্যতম সেরা বাইক স্টান্টকারী হয়ে উঠতে পারতেন বলে দাবি করেন এই যুবক।
পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ইলিশা ঘাট এলাকার মো. হাসানইন, মো. আজাদ ও আব্দুর রহিম বলেন, আগে আমরা ইউটিউবে দেখতাম বিভিন্ন কৌশলে বাইক স্টান্ট করতে। তখন ভাবতাম এগুলো সত্যি না, গ্রাফিক্স ডিজাইনে করা। কিন্তু এখন আমরা ইমনের বাইক স্টান্ট দেখে নিশ্চিত হতে পেরেছি সেগুলো সবই সত্যি।
তারা আরও বলেন, ইমন যেভাবে আমাদের চোখের সামনে বাইক স্টান্ট করে তাতে মনে হয় আমরা অলৌকিক কিছু সামনে ঘটতে দেখছি। তার বাইক স্টান্ট দেখতে রাস্তার দুই পাশের মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে। কেউ কেউ ছবি তোলে, ভিডিও করে। ইমনকে যদি এ ধরনের বাইক স্টান্টের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পাঠানো হয় তাহলে সে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের মুখ উজ্জল করবে।
এফএ/জিকেএস