দেশে গণতন্ত্র নিয়ে যখন সরকার বিরোধীদের আলোচনা সমালোচনা চলছে ঠিক সেই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্রের বিষয়ে উজ্জীবিত করছে সরকার। আর এরই অংশ হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্র চর্চায় সারাদেশের স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন ২০১৬ শুরু হয়েছে। ফলে গণতন্ত্রের মূল মন্ত্র চর্চার উপর আগ্রহী হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীরাও।সোমবার মতিঝিল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলে দেখা যায়, স্কুলটিতে নির্বাচন চলছে। ভোট কেন্দ্রে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ পরিদর্শনে গেলে নির্বাচন কমিশনার (শিক্ষার্থী) প্রশ্ন করেন, “নির্বাচন কেমন হচ্ছে স্যার?” উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “ভালো, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে, আমি এতে সন্তুষ্ট।”শিক্ষামন্ত্রীকে বিভিন্ন নির্বাচনী কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেখান নির্বাচন কমিশনার (দশম শ্রেণির ছাত্রী রোকাইয়া আলম মুন) ও রির্টানিং অফিসার (দশম শ্রেণির প্রভাতি শাখার যাইনাব বিনতে মিজান রিফা)। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন উপদেশ ও পরামর্শ দেন।শিক্ষামন্ত্রী বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি বাস্তব জ্ঞান অর্জন করতে হবে। ভালো মানুষ হতে হবে। আমাদের সময় শেষ। তোমরাই আগামী দিনের ভবিষৎ। তোমাদের অাধুনিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং দেশের পাশাপাশি বিশ্বের নেতৃত্ব দিতে হবে।ভোট গ্রহণ ও প্রদানকারী থেকে শুরু করে শৃঙ্খলার দায়িত্ব সব জায়গায়ই ছিল শিক্ষার্থীরা। আর তাদের নির্বাচনের বিভিন্ন কার্যক্রম দেখে মুগ্ধ শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের এই সুশৃঙ্খল নির্বাচন গণতন্ত্র চর্চার সহায়ক হবে এবং আগামী দিনে নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটবে।”গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলে কেবিনেট নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দশম শ্রেণির ছাত্রী রোকাইয়া আলম (মুন)। কমিশনের দায়িত্ব কেমন লাগছে জানতে চাইলে মুন জানায়, “এ ধরনের দয়িত্ব পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। নির্বাচনের সব ধরনের কাজের আমি তদারকি করছি। নির্বাচন খুব সুন্দর হচ্ছে। কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। এ ধরনের কাজ আমাদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। আমার আনন্দের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। ভোটাররাও উৎসাহ উদ্দিপনায় ভোট দিচ্ছে।”ক্ষুদেরদের নির্বাচন বিষয়ে কামরুন নাহার নামে এক অভিবাবক বলেন, এ ধরনের কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের মনবল বাড়িয়ে দিবে। ছোটবেলা থেকেই তারা দেশ ও সমাজ গঠনে বাস্তব অভিজ্ঞতা পাবে। ফলে আগামী দিনের সঠিক নেতৃত্ব বেড়িয়ে আসবে।তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের হানাহানি ছাড়াই সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন পরিচালনা করছে। তাদের দেখে রাজনৈতিক নেতাদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ। জানা গেছে, স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনে সব কিছু পরিচালনায় করছে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই। এদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন, রিটানিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ নির্বাচনী কাজের নিরাপত্তাসহ যা যা প্রয়োজন সব ক্ষেত্রেই শিক্ষার্থীরা। শুধু শিক্ষকরা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেন।উল্লেখ, সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলে ভোটগ্রহণ। একজন ভোটার প্রত্যেক শ্রেণিতে একটি এবং সর্বোচ্চ তিন শ্রেণিতে ২টি করে মোট ৮টি ভোট দিতে পারবে। প্রত্যেক শ্রেণি থেকে একজন করে পাঁচ শ্রেণি (ষষ্ঠ থেকে দশম) থেকে ৫ জন ও পরবর্তী সর্বোচ্চ ভোট প্রাপ্ত তিন শ্রেণির ৩ জন মোট ৮ জন নিয়ে স্টুডেন্টস কেবিনেট গঠিত হবে। তাদের মধ্যে একজন কেবিনেট প্রধান থাকবে।এসআই/আরএস/আরআইপি