তথ্যপ্রযুক্তি

প্রোগ্রামিংয়ে মেতেছে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা

কেবল সম্পদ সৃষ্টি হয়, মানুষের জীবনযাপনের মান উন্নয়নেও আইসিটির ভূমিকা অনস্বীকার্য। আর এই দৌড়ে টিকে থাকার জন্য দরকার বিশ্বমানের অগণিত প্রোগ্রামার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রোগ্রামার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে হাইস্কুল পর্যায় থেকে কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু বাংলাদেশে হাইস্কুল পর্যায়ে প্রোগ্রামিংয়ের চর্চা একেবারেই সীমিত। আর তাই সারাদেশের হাইস্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি আগ্রহী করে তোলা এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য গত বছর থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। শিক্ষার্থীরা যেন নিজেদের সক্ষমতা সবাইকে দেখিয়ে দিতে পারে তার জন্য এর স্লোগান দেয়া হয়েছে ‘জানুক সবাই, দেখাও তুমি’। গত বছর শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সারা পাওয়ার পর এ বছর আরও বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের আয়োজন।দেশের ১৬টি শহরে এই প্রতিযোগিতার আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে রংপুর, রাজশাহী,  খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ঢাকা, গোপালগঞ্জ, পাবনা, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, নোয়াখালী, কুমিল্লা, যশোর ও দিনাজপুর। সব অঞ্চলের বিজয়ীদের নিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ৭টি অঞ্চলে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে।প্রতিযোগিতায় প্রোগ্রামিং ছাড়াও আইসিটি কুইজও অর্ন্তভুক্ত রয়েছে। ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৪র্থ সেমিস্টার পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা।প্রথমবারের মতো প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সালেহ বিন জাফর জানালো, প্রোগ্রামিং বিষয়টা খুব কঠিন মনে করতাম কিন্তু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে দেখি এটা অনেক মজার। প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি আমার প্রেম সৃষ্টি করেছে জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা।আয়োজন নিয়ে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ভিত্তিমূল গড়তে হাইস্কুল থেকেই শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিং উপযোগী করে গড়ে তুলতে এ আয়োজন। হাইস্কুল থেকে প্রোগ্রামিং চর্চা করে এলে তারা উচ্চ পর্যায়ে (কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়) ভালো করবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দেশে প্রোগ্রামারের যে সংকট রয়েছে, তা এ ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দূর করা সম্ভব হবে।বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নের্টওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে আমাদের প্রযুক্তির ভাষা জানতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির সঙ্গে থাকতে হবে, নিজের মেধা দিয়ে প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, প্রোগ্রামিং মাধ্যমে বিশ্বের অন্যদের সঙ্গে আমাদের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যেতে হবে।প্রতিটি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে অনুষ্ঠিত হয় ৩০ মিনিটব্যাপি কুইজ ও দুই ঘণ্টাব্যাপি প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। কুইজ প্রতিযোগিতা শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রোগ্রামিং বিষয়ে চলে প্রশ্নোত্তর ও আলোচনা পর্ব। অঞ্চল ভিত্তিক এই প্রতিযোগিতা সকাল ৮টায় শুরু হয়ে প্রতিযোগিতা চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। পরবর্তীতে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দুই ক্যাটাগরিতে ২০ জন এবং কুইজে তিন ক্যাটাগরিতে ৬০ জন বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।আঞ্চলিক পর্বের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রোগ্রামিং বিষয়ে সচেতনতার জন্য ইতোমধ্যে ৫৪ জেলার প্রায় ৬০০টি স্কুলে অনুষ্ঠিত হয়েছে অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম।জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজনে রয়েছে আইসিটি বিভাগ, প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বাস্তবায়ন সহযোগী বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন), একাডেমিক সহযোগিতায় কোডমার্শাল এবং পার্টনার হিসেবে রয়েছে কিশোর আলো, এটিএন নিউজ ও বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ)। প্রতিযোগিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার ওয়েব ঠিকানা www.nhspc.org। এছাড়া ফেসবুক পেইজেও বিস্তারিত জানা যেতে পারে www.facebook.com/nhspcbd ।এআরএস/আরআইপি