ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ব্যায়ামাগারে (জিম) গোপনে ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় এক গৃহবধূসহ দুজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লবসহ আটক তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
তবে এ ঘটনায় বাদীর করা এজাহার অনুযায়ী সদর মডেল থানাপুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত না করে একটি ‘সাধারণ মামলায়’ রূপান্তরের অভিযোগ উঠেছে। এতে গোপনে ভিডিও ও ছবি তোলার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। জব্দ করা হয়নি ভিডিও ধারণে ব্যবহার করা আসামিদের মোবাইলফোন। এতে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের এপিপি মাসুদুর রহমান সোহাগ।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর কোনো উপায় না দেখে আমি ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ আসে। পরে সেখান থেকে আসামিদের আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বলেছি, যেহেতু ঘটনার সূত্রপাত মোবাইলে ছবি-ভিডিও ধারণ করা নিয়ে, তাই আসামির মোবাইল জব্দ করুন। কিন্তু তারা আমার কথায় কর্ণপাত করেননি। শুধু বলছিলেন, সঙ্গে কোনো নারী পুলিশ সদস্য নেই। একটি মোবাইল জব্দ করতে নারি পুলিশ সদস্যের প্রয়োজন কি হয়?’
আরও পড়ুন: জিমে গোপন ভিডিওর প্রতিবাদ করায় মারধর, ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ৩
মাসুদুর রহমান বলেন, ‘রাতে আমি থানায় লিখিত এজাহারে বিস্তারিত উল্লেখ করে জমা দিয়েছি। সেখানে মোবাইলে ভিডিও ধারণের কথা বলা হয়েছে। সেই এজাহারেই মামলাটি নথিভুক্ত করলেন। কিন্তু এফআইআরের প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে মোবাইলের ভিডিও ধারণের কোনো বিষয় উল্লেখ নেই। আসামিদের বিরুদ্ধে শুধু মারধর ও চুরির ধারা যুক্ত করে মামলাটি এফআইআর করা হয়েছে। আদালতে সেই বিষয়টি নজরে এসেছে।’
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার পরিদর্শক সুমন চন্দ্র বনিক বলেন, ‘মোবাইলটিতে কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই সেই ধারা যুক্ত করা হয়নি। মোবাইলটিও জব্দ করা হয়নি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মোবাইলটি আমাদের এক সদস্যের কাছে। তা প্রয়োজনে জব্দ করা হবে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, মামলায় কোন কোন ধারা উল্লেখ করা হয়েছে, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
বাদীর অভিযোগ, ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৩০ আগস্ট) সন্ধ্যায় জেলা শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস ক্লাব নামের একটি জিমে। সেখানে গোপনে ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় দুই নারীসহ তিনজনকে মারধর করেন জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব ও জিমের ফিটনেস ট্রেইনার মিতু আক্তার।
পরে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি বিপ্লবসহ তিনজনকে আটক করে। তাদের আটক করার পর ছাত্রলীগের আরেক নেতাসহ কয়েকজন থানায় তদবির করতে থাকেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/জেআইএম