শরীয়তপুর সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন সরদার ও তার লোকদের বিরুদ্ধে মামুন খান নামের এক ব্যক্তির সাতটি দোকানঘর দখলের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শরীয়তপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী দোকানমালিক মামুন খান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সদর হাসপাতাল সংলগ্ন তুলাসার মৌজায় বিআরএস ২৬১০ নম্বর দাগে ৫১ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মামুন খানের বাবা মৃত সামাদ খান। ২০১৫ সালে সামাদ খান মারা যাওয়ার আগে তার ছেলে মামুন খানকে ৩১ শতাংশ ও তিন মেয়েকে ২০ শতাংশ জমি লিখে দেন। ওই তিন মেয়ের মধ্যে রুমা খান জুরি ২০১৯ সালে ৩ শতাংশ জমি মো. আমির আলীর কাছে রেজিস্ট্রি বায়না করেন। সেই রেজিস্ট্রি বায়নায় উল্লেখ ছিল তিন মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করে জমি সাব কবলা দলিল করে নিতে হবে। তিন মাস অতিক্রম হলে বায়না বাতিল হয়ে যাবে।
ওই বায়না রেজিস্ট্রির চার বছর পার হয়ে গেছে। যে ৩ শতাংশ জমি বিক্রির জন্য বায়নাপত্র করা হয়েছিল সেই জমিটি মামুন খানের জমির দক্ষিণ পাশে। কিন্তু অভিযুক্তরা ওই জমি সাব কবলা করে না কিনেই দুই বছর আগে জমি ভরাট করার জন্য বাঁধ দেন। এরপর থেকে তারা ১০ শতাংশ জমি দাবি করে জোরপূর্বক জমি দখলের পাঁয়তারা করে যাচ্ছেন।
সবশেষ গত ২৪ আগস্ট সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন সরদারের নেতৃত্বে জামাল সরদার, আমির সরদার, বিল্লাল পাহাড়, সিরাজ সরদার ওই জমির ওপর নির্মাণ করা দোকানঘরের দেওয়াল ভেঙে ফেলেন। এছাড়া রাস্তার পাশে থাকা সাতটি দোকানের ভাড়াটিয়াদের ভয়ভীতি দেখিয়ে দোকান বন্ধ করে দেন। এসময় দোকানে থাকা বিদ্যুতের মিটারও খুলে দেন তারা। এরপর তারা ওই জমি দখল করে ঘর নির্মাণ করেন ও জমির মালিকানা দাবি করে সাইনবোর্ড টানিয়ে রেখে চলে যান।
বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ দোকান খুলে দেয়। তবে এরপর থেকে মামুন খানকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে চলেছেন সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন সরদার ও তার লোকেরা।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী সুমাইয়া হোটেলের মালিক মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমার দোকানে প্রতিদিনের মালামাল প্রতিদিন বিক্রি করতে হয়। তা নাহলে নষ্ট হয়ে যায়। যুবলীগের সভাপতি হোসেন সরদার, জামালসহ ১০-১৫ জন লোক এসে দোকান বন্ধ করতে বলেন। তখন আমি তাদের বলেছিলাম, আমার দোকানে সব কাঁচামালের জিনিস রয়েছে, এখন বন্ধ করে দিলে সব নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু তারা কোনো কথা না শুনে জোর করে দোকান বন্ধ করে দেন। দোকান বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে চলতে কষ্ট হচ্ছে এখন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন সরদার বলেন, ‘জমিটির দলিল আমির আলীর নামে। বায়নাপত্রটিও তার নামে করা হয়েছে। আমির আলীসহ আমরা ছয়জন পার্টনার মিলে মামুন খানের বোনের থেকে ১০ শতাংশ জমি ২০১৯ সালে বায়নাপত্র করি। রেজিস্ট্রি বায়নার কোনো মেয়াদ নেই। যতই লেখা থাকুক জীবনেও এর মেয়াদ যাবে না। ওই জায়গাটি আমাদের।’
তিনি আরও বলেন, আমি মামুন খানের দোকানপাট বা কোনো দেওয়াল ভাঙচুর করিনি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বন্ধ করে দেওয়া দোকানগুলো খুলে দেয়। তবে প্রাণনাশের হুমকির কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআর/জেআইএম