দিনাজপুরের হিলি স্টেশনে ট্রেনের যাত্রাবিরতী এবং আধুনিকায়নের দাবিতে হিলি নাগরিক কমিটির ব্যানারে রেলপথ অবরোধ করেন হিলিবাসী। এতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। এর দুইদিন পর মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে স্টেশনে স্টেশনমাস্টার, বুকিংমাস্টার ও পয়েন্টম্যান যোগদান করেন।
তবে যোগদানের পরদিনই বুধবার রাতে আবারো স্টেশনমাস্টারকে প্রত্যাহার করে নেয় রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল। বর্তমানে বুকিং মাস্টার স্টেশনে অবস্থান করছেন।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সকল ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও আধুনিকায়নের দাবিতে নাগরিক কমিটির ব্যানারে মানববন্ধন করেন হিলিবাসী। ওই সময় রাজশাহী থেকে চিলাহাটিগামী তিতুমির ট্রেনটি তারা আটকে দেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ঢাকার সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা লাইনের ওপর শুয়ে পড়েন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত স্টেশনটি সচল করতে লোকবল দেয় কর্তৃপক্ষ। ‘স্টেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে, পাশাপাশি ঢাকাগামী ট্রেনের স্টপেজও দেওয়া হবে।’ ওই সময় এমনটিই জানিয়েছিলেন হিলি রেলস্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার সাইফুল ইসলাম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হিলি স্টেশনে ডাউনলাইনে বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, রকেট মেইল এবং আপ লাইনে তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেন দুই নম্বর লাইনে দাঁড়াচ্ছে। তবে ঢাকাগামী কোনো ট্রেন এখানে দাঁড়ায় না। নিয়মিত বেতন না পাওয়ার কারণে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের দিকে অস্থায়ী স্টেশনমাস্টার চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
হিলি স্টেশনটি সীমান্তের শূন্যরেখা হওয়ায় চোরাচালান ও নিরাপত্তার জন্য গত বছরের মাঝামাঝি সময় সন্ধ্যা ৬টার পর স্টেশনে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি সদস্যরা। সেই সময় থেকে ভারত থেকে ওয়াগনে আসা বিভিন্ন পণ্য পার্শ্ববর্তী পাঁচবিবিতে খালাস করতে হয় ব্যবসায়ীদের। স্টেশনের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সেই সময় মানববন্ধনসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেন।
জানতে চাইলে হিলি নাগরিক কমিটির অন্যতম সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিলি বন্দর। এখান থেকে সরকার প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকা আয় করে। কিন্তু কী কারণে এখানকার রেল স্টেশনটির কার্যক্রম এতদিন বন্ধ রেখেছে এটা আমরা জানি না। স্টেশনটি বন্ধের কারণে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়েছে। অন্য স্টেশনে মাল অনলোডের কারণে ব্যবসায়ীদের লোকশান গুনতে হচ্ছে। দুদিন আগে স্টেশনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন স্টেশনমাস্টারসহ তিনজন যোগদান করেন। কিন্তু কী কারণে আবারো মাস্টারসহ দুজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এটা আমাদের জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, কর্তাবাবুদের কাছে জোর দাবি স্টেশনটি আবারও চালু করে শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুন। যদি তা না হয় তাহলে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। স্টেশনটি পুনরায় লোকবল নিয়োগ দিয়ে আগের মতো স্বাভাবিক না করলে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
মো. মাহাবুর রহমান/এফএ/জেআইএম