দেশজুড়ে

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, বন্যা আতঙ্কে কুড়িগ্রামবাসী

গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি প্রবেশ করায় বন্যার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

এছাড়া তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। একদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, অন্যদিকে নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে লোকজন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার রেকর্ড অনুযায়ী জেলার অন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলগুলোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ঘরবাড়ি তলিয়ে না গেলেও আমনক্ষেত নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। এরইমধ্যে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চর খিতাবখাঁ, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর বিদ্যানন্দ, চর পাড়ামৌলা, চর তৈয়ব খাঁর নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

গতিয়াশাম এলাকার বাসিন্দা কৃষক মো. আব্দুল মোমেন বলেন, কিছুদিন আগে বন্যার পানিতে আমার দুই বিঘা আমনক্ষেত তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আবার নতুন করে ধান লাগিয়েছি। আবার যদি বন্যা হয় তাহলে আবার আমন নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হিরা বলেন, রোববার থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার বাম তীরে ঘড়িয়াল ডাঙা এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে অনেক মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে আরও অনেকেই বাড়িঘর জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি আবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে বড় ধরনের বন্যার শঙ্কা নেই। রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করেছে।

ফজলুল করিম ফারাজী/এমআরআর/এএসএম