জাতীয়

‌‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করতে হবে’

‌‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করতে হবে’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মিজানুর রহমান বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করতে হবে। তিনি বলেন, সিডর, রানা প্লাজা ধস ও মোখায় আমরা দেখেছি আমাদের সক্ষমতা।

Advertisement

সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে বন্যায় অনেক মানুষ মারা গেছে। কিন্তু আমাদের কক্সবাজারে ২০ জনের বেশি মারা যায়নি। দুর্যোগে বাংলাদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে পারে। আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উন্নতমানের।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘স্ট্রেংথেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স (সুপার)’ প্রকল্পের কনসোর্টিয়ামের লার্নিং শেয়ারিং সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সুপার প্রকল্পের কনসোর্টিয়াম ম্যানেজার আ ম নাছির উদ্দিন।

মিজানুর রহমান বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলা ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জ্ঞান না থাকলের কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না। তাই দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। উন্নতির সঙ্গে ঝুঁকিও বাড়ে। তাই ঝুঁকির বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যম যে কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

Advertisement

তিনি বলেন, আমরা ভূমিকম্প নিয়ে বেশি কিছু করতে পারি না। ভূমিকম্প বড় কোনো দুর্যোগ নয়। আমরা বিল্ডিং কোড না মেনে নিজেরাই ভূমিকম্পের ক্ষতি সৃষ্টি করি। দক্ষিণাঞ্চলে আমাদের পদ্মা সেতু ৪০০ বছরের ভূমিকম্প পর্যালোচনা করে তৈরি করা হয়েছে। ওই অঞ্চলে ৭.৫ রিক্টার স্কেলে সর্বোচ্চ ভূমিকম্প হতে পারে। এটা বিবেচনায় রেখেই পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে। মেট্রোরেলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। দেশের উন্নতি অবকাঠামোগত নির্মাণে সবসময় সেফটি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সঠিক রাখতে হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল। আমাদের নবীন ও তরুণরা যেন সেফটি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সবকিছু শিখতে ও জানতে পারে সেজন্য বিভিন্ন লার্নিং অ্যাপ ও গেমসর মাধ্যমে তাদের আগ্রহ জন্মাতে হবে।

ইউনাইটেড পারপাসের কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীরামাম্পা গানচিকা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম বেসরকারি সেক্টর ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (পিইওসি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন জরুরি তথ্য ও সেবা দেওয়ার জন্য এ বছর একটি ওয়েবপেজ চালু করা হয়েছে। পিইওসি স্বেচ্ছাসেবক এবং দুর্যোগের ঘটনাগুলোর একটি অনলাইন ডাটাবেজও তৈরি করেছে। ডেটাবেজগুলো পিইওসি ওয়েবপেজে প্রকাশিত হবে এবং ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের (এনইওসি) সঙ্গে যুক্ত করা হবে।

Advertisement

বক্তারা আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিইওসি আগুন, ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত ১৫৮টি বিভিন্ন ঘটনার রিপোর্ট রেকর্ড করেছে। পিইওসি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স (এফএসসিডি) প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্সে বেসরকারি খাতের ২০৪ স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এবং ১০৪ জনকে পিইওসি এর স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরের (এসঅপি) প্রশিক্ষণ দিয়েছে। পিইওসি ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে সিমুলেশন অনুশীলন এবং মক ড্রিলও পরিচালনা করে। পিইওসি কোম্পানির ডাটাবেসে মোট ১৬৪০টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে।

একশনএইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ যৌথভাবে ২০২০ সালের ১ জুন থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘স্ট্রেংথেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স (সুপার)’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।

এই প্রকল্পের লক্ষ্য ভূমিকম্প এবং সংশ্লিষ্ট বিপদ বিবেচনা করে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ায় বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ এবং তাদের নেতৃত্বের প্রচার করা। ইউরোপিয়ান সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশনস (ইকো) এই প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে।

টিটি/এমআরএম