দেশজুড়ে

চারপাশে কেবল মাকে খুঁজে ফিরছে ছয় মাসের রাইয়ান

৬ মাসের শিশু সাদ রাইয়ান। একটু পর পর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে আর খুঁজছে তার মাকে। কিন্তু শিশুটি বুঝতে পারছে না তার মা আর ফিরবে না। সড়ক দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছে তার মা হালিমা তুজ সাদিয়া (১৮)।

যে বয়সে রাইয়ানের মায়ের কোলে খেলার কথা সে বয়সে মা হারা হয়ে গেলো শিশুটি। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে শরীয়তপুর সদর উপজেলার শুবচনী বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৫ বছর আগে গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া বালিকুড়ি এলাকার লাল মিয়া শিকদারের ছেলে রায়হান শিকদারের সঙ্গে বিয়ে হয় মাছুয়াখালি এলাকার বাবা-মা হারা হালিমা তুজ সাদিয়ার। ৬ মাস আগে তাদের সংসারে জন্ম নেয় সাদ রাইয়ান নামের এক ছেলে সন্তান। সম্প্রতি শিশুটির হাতে চুলকানি দেখা দিলে স্থানীয় নাগেরপাড়া বাজারে পল্লি চিকিৎসক দেখানো হয়। এরপরও ভালো না হলে বৃহস্পতিবার সকালে বাবা রায়হান শিকদার ও মা হালিমা তুজ সাদিয়া রাইয়ানকে নিয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে শুবচনী বাজারে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসছিলেন। পথিমধ্যে একটি গুইসাপ রাস্তা পার হওয়ার সময় ভ্যানের সামনের চাকার নিচে পড়লে উল্টে যায় ভ্যানটি। এতে ভ্যানের নিচে চাপা পড়ে হালিমা গুরুতর আহত হন। পরে হালিমাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বামী রায়হান শিকদার আহাজারি করে বলেন, আমার স্ত্রী এভাবে মারা যাবে মেনে নিতে পারছি না। এত তাড়াতাড়ি আল্লাহ আমার স্ত্রীকে নিয়ে গেলো। আমার ছেলেটি আজ এতিম হয়ে গেলো। ওরে আমি কীভাবে বড় করবো।

নিহতের শাশুড়ি মাজেদা বেগম বলেন, বাবা-মা হারা এতিম মেয়েকে ছেলের বউ করে এনেছিলাম। অনেক যত্ন করতো আমাদের। এভাবে মৃত্যু হবে তা কোনোভাবেই মানতে পারছি না। আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। পোস্টমর্টেম ছাড়া আমরা আমাদের ছেলের বউয়ের মরদেহ বাসায় নিয়ে মাটি দিতে চাই।

ভ্যানচালক মন্নান হোসেন বলেন, ‘রানিং গাড়ি চালাইতেছিলাম। হঠাৎ কইরা একটা গুইল সাপ আমার গাড়ির সামনের চাক্কার নিচে পড়লে গাড়ি উল্টাইয়া যায়। পরে উনি চাপা পড়েন।’

এ বিষয়ে পালং মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, নাগেরপাড়া থেকে শুবচনী আসার আগে একটি ভ্যান উল্টে এক নারীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

এফএ/জিকেএস