পটুয়াখালী-১ আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গির আলমের সই করা তফসিল অনুয়ায়ী ১ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিল, ২ নভেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই, ৯ নভেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং ১০ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। ২৬ নভেম্বর ভোটগ্রহণ হবে।
এদিকে তফসিল ঘোষণার পরপরই পাল্টে গেছে জেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। বিশেষ করে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করলেও উপ-নির্বাচনের খবরে ঢাকায় ফিরে যাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাবার আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মাকে নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন পটুয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং শাহজাহান মিয়ার মেজ ছেলে অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান মনি।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালী-১ আসনের এমপি শাহজাহান মিয়া মারা গেছেন
বিকেলে পটুয়াখালী থেকে ঢাকা ফিরে গেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। বিকেলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন দুমকি উপজেলা চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ হাওলাদার। বিকেলে পটুয়াখালী থেকে ঢাকা গেছেন আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটির সদস্য রাজীব পারভেজ। রাতে ঢাকা গেছেন পটুয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার।
গেলো সোমবার রাতে ঢাকা গেছেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুলতান আহম্মেদ মৃধা। ওইদিন বিকেলে ঢাকায় ফিরে গেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য আলী আশরাফ।
প্রায়ত শাহজাহান মিয়ার মেজ পুত্র ও মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান মনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজ আমার বাবার রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে। বাদ আসর শহরের বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়। আমার পরিবার শোকাহত। তবে দুপুরে তফসিল ঘোষণার পর আমি এবং আমার মা ঢাকায় এসেছি। আমাদের পরিবার একটি রাজনৈতিক পরিবার। নেত্রীর কাছে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে পটুয়াখালী-১ আসনের মনোনয়ন চাইবো। নেত্রী যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তবে বাবার অসমাপ্ত কাজগুলোকে এগিয়ে নিতে চাই। তবে নেত্রীর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।
মনি আরও বলেন, আমার পরিবারকে তিনি অনেক কিছু দিয়েছেন। বাবাকে ধারাবাহিক ভাবে মনোনয়ন দিয়ে সংসদ সদস্য বানিয়েছেন, মন্ত্রী বানিয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর আমার বাবা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন। আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন, আমার ছোট ভাইকে যুবলীগের সভাপতির হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিয়েছে, আমি এখন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আর এর সবকিছুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসার কারণে। তিনি আমরদের জন্য যা করেছে তা আমার পরিবার আজীবন স্মরণ রাখবে। এমনকি মৃত্যুর পরও আমার বাবাকে তিনি সন্মানিত করেছেন। বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে মরদেহ পটুয়াখালীতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চীর কৃতজ্ঞ।
২১ অক্টোবর ভোর ৬টায় ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পটুয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া। পরদিন সংসদ সচিবালয় পটুয়াখালী-১ আসনকে শূন্য ঘোষণা করে।
আব্দুস সালাম আরিফ/এসজে/এএসএম