এক সপ্তাহ আগেও কচুরিপানা-প্লাস্টিক ও আবর্জনায় ঠাসা ছিল শরীয়তপুর শহরের পালং খাল। খালের সে দৃশ্যপট বদলে দিলেন স্কাউটের একদল তরুণ-তরুণী। অবর্জনায় ভরপুর পালং খাল এখন স্বচ্ছ পানির জলাধার।
স্থানীয়রা জানান, শহরের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া পালং খালের দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার। এক সময় খালটিতে পানি প্রবাহ ছিল। চলাচল করতো ছোট-বড় নৌযান। তবে দীর্ঘদিন খালটির কয়েকটি স্থানে ময়লা ফেলার কারণে পানি প্রবাহ আটকে যায়। এতে করে দূষণ ও দুর্গন্ধে ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন পথচারীরা।
পূজার ছুটিতে হাজী শরীয়তউল্লাহ মুক্ত স্কাউট গ্রুপ ও শরীয়তপুর মুক্ত রোভার স্কাউট গ্রুপের ২৬ সদস্য খালটি পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন। তাদের এ ব্যতিক্রমী এ কাজে অংশ নেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাও। গত ৬ দিনে খালের আবর্জনা সরিয়ে দুষণযুক্ত খালটির পানি প্রবাহ ফিরিয়ে নিয়ে আসেন তারা।
আরও পড়ুন: সড়কে পড়ে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করলেন কর্মীরা
সরেজমিনে দেখা যায়, পালং খালটির বিভিন্ন অংশে ২৬ জন স্কাউট সদস্যরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে খালটি পরিষ্কার করছেন। এদের মধ্যে কেউ বাঁশের লাঠির সঙ্গে লোহার রড বেঁধে খালের ওপর ও তলদেশে থাকা প্লাস্টিক টেনে তুলছেন। সেখান থেকে ময়লাগুলোকে টেনে তোলা হচ্ছে পৌরসভার ময়লার ট্রাকে।
রেজওয়ান হোসেন নীল নামের এক স্কাউট সদস্য বলেন, খালটি আমাদের শরীয়তপুর শহরবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে এটি দূষণ হওয়ায় পানিপ্রবাহ আটকে গিয়েছিল। তাই এটি দূষণমুক্ত করে পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আমাদের। পূজার ছুটিকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেই আমরা। পরে আমরা ২৬ জন ছেলে-মেয়ে একত্রিত হয়ে ৬ দিন ধরে কাজ করছি খালটিকে দূষণমুক্ত করার জন্য।
খাদিজা আফরোজ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, খালটি পরিষ্কার করার মধ্যদিয়ে আশপাশের দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ময়লা-আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ করি। তারা যেন নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলেন। তাহলে খালটি আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।
খাল পরিষ্কার করার কাজ করছেন খলিলুর রহমান নামের স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষক। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, খালটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। একসময় খালটিতে পানিপ্রবাহ থাকলেও বর্তমানের খালটির অবস্থা আমাকে পীড়া দিতো। আমার এক বন্ধু স্কাউট সদস্যদের নিয়ে খালটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নিলে আমিও তাদের সঙ্গে অংশ নেই।
স্কাউট দলের সমন্বয়ক খাইরুল বাশার কল্লোল জাগো নিউজকে বলেন, পূজার ছুটি চলমান থাকায় সময়টি আমরা ভিন্নভাবে কাজে লাগাতে উদ্যোগ নেই। দুটি স্কাউট ও রোভার দলের সদস্য আমাদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে কাজটি করছে
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জাগো নিউজকে বলেন, খালটি হচ্ছে শহরের প্রাণ। খালটি দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ ছিল। স্কাউটের সদস্যরা খালটি পরিষ্কার করেছেন। এজন্য আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
বিধান মজুমদার অনি/আরএই/জিকেএস