সচেতন হলেই থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ সম্ভব। এজন্য বিয়ের পূর্বেই ছেলে ও মেয়ে উভয়ের রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং রোগটি নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা প্রয়োজন।
শনিবার নাটোরের আমজাদ খান চৌধুরী নার্সিং কলেজ ও প্রাণ এগ্রো লিমিটেড-এর কারখানায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। নাটোরের আমজাদ খান চৌধুরী মেমোরিয়াল হাসপাতালের আয়োজনে এ মতবিনিময় সভায় সহযোগিতা করে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতাল। অনুষ্ঠানে থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি, কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় এবং থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা প্রটোকল নিয়ে আলোচনা হয়। আমজাদ খান চৌধুরী মেমোরিয়াল হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ফাইন্যান্স) উজমা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ডা. একেএম একরামুল হোসেন ও চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. কবিরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ডা. একেএম একরামুল হোসেন বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি রক্ত স্বল্পতাজনিত মারাত্মক বংশগত রোগ। বাবা ও মা উভয়েই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে, তাদের সন্তানদের মধ্যে কেউ কেউ থ্যালাসেমিয়ার রোগী হতে পারে, যার ফলে এক বছর বয়স থেকে রক্তশূন্যতা দেখা যেতে পারে এবং প্রায় প্রতি মাসেই নিয়মিত রক্ত পরিসঞ্চালন করতে হয় তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য।
আলোচকরা বলেন, এ রোগ নির্মূলে প্রধান উপায় সচেতনতা। একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কেউ থ্যালাসেমিয়ার জিন বহন করছে কি না, তা জানা সম্ভব। যদি ছেলে ও মেয়ে উভয়ই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হন তাহলে তাদের বিবাহের সম্পর্কে যাওয়া উচিত নয়। দেশে এটি বাধ্যতামূলক করা এবং থ্যালাসেমিয়া নিয়ে ব্যাপক আকারে প্রচারণা চালানো উচিত। উজমা চৌধুরী বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে আমরা চিকিৎসা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে কাজ করছি। থ্যালাসেমিয়া এমন একটি রোগ যা একটু সচেতন হলেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। আশা করছি, এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে পারলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। ২০১৭ সালে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ নাটোরে আমজাদ খান চৌধুরী মেমোরিয়াল হাসপাতাল চালু করে। হাসপাতালে আইসিইউ, এইচডিইউ, এনআইসিইউ, ব্লাড ব্যাংক, ব্লাড ট্রান্সফিউশন, তিনটি অপারেশন থিয়েটারসহ ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা ও বিভিন্ন ধরনের রোগ নির্ণয়ে আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। নাটোর জেলাসহ আশপাশের জেলা থেকে আগত রোগীরা কম খরচে চিকিৎসা নিতে পারছেন। একই সঙ্গে হাসপাতালের কাছেই গড়ে তোলা হয়েছে আমজাদ খান চৌধুরী নার্সিং কলেজ; যেখান থেকে ছেলেমেয়েরা বিএসসি, ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াফারি কোর্সে পড়ালেখা করে নিজেদের দ্রুত স্বাবলম্বী এবং রোগীদের সেবায় নিয়োজিত করতে সক্ষম হচ্ছে।
এমএইচআর/এএসএম