শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপীঠ বিঝারী উপসী তারা প্রসন্ন উচ্চ বিদ্যালয়। ১৮৯৮ সালের ১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে আজ ১২৫ বছরে পা দিয়েছে। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিদ্যালয় দিবসে নানা আয়োজন ও আড্ডায় দিন কাটিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পদ্মা, মেঘনা ও কীর্তিনাশা নদীর অববাহিকায় শরীয়তপুর জেলার অবস্থান। নদী অববাহিকায় হওয়ায় জেলার অধিকাংশ এলাকাই ছিল চরাঞ্চল। এলাকার মানুষের পড়ালেখা করার জন্য ছিল না কোনো উচ্চ বিদ্যালয়। কৃষিকাজ আর নদীতে মাছ শিকার করেই চলতো তাদের জীবন ও জীবিকা।
এমন পরিস্থিতিতে ১৮৯৮ সালে উপসী এলাকার তারা প্রসন্ন ভাট্টাচার্য্য নামে এক ব্যক্তি তার ২ একর ৭ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ১ হাজার ২৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শুক্রবার বিদ্যালটির ১২৫ বছর পূর্তি হয়েছে। ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এতে অংশ নেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
আয়োজন করা হয় রচনা প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
১৮৯৮ সালে এই বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন ভোজেশ্বর বাজারের ব্যবসায়ী রতন হাওলাদার। তিনি বর্তমানে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়েছেন। সবাই মিলে আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছেন। ছোট পরিসরে হলেও নবীন ও প্রবীণের এই মিলন মেলাটি আমাদের আনন্দিত করেছে। এ স্মৃতিটি আমাদের অনেক দিন মনে থাকবে।
সত্যজিৎ ঘোষ নামের আরেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, আমি এই বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেছি। তবে কর্মব্যস্ততার কারণে এখন আর সেভাবে এখানে আসা হয় না। আজ আমাদের বিদ্যালয়ের ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনেকে মিলে একত্রিত হতে পেরেছি। নানা আয়োজনের সঙ্গে দিনটি খুব দারুণ কেটেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমীন রতন বলেন, অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করা এই বিঝারী উপসী তারা প্রসন্ন উচ্চ বিদ্যালয়। আদর্শ মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠার একমাত্র বিদ্যাপীঠ ছিল এটি। বিশিষ্ট সাহিত্যিক আবু ইসহাক, সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবুল কাসেম, আলী আহম্মেদ মোক্তার, ড. কে এম জলিল, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিলেন। আজ বিদ্যালয়টি ১২৫ বছরে দাঁড়িয়েছে। স্বল্প পরিসরের এ আয়োজনে এতো উচ্ছ্বাস, আনন্দ দেখে আমরা শিক্ষকরাও আনন্দিত। আগামী বছর বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে বড় করে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এফএ/এমএম