মোংলা বন্দরে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে শক্তিশালী চোরাচালান ও চোরাই সিন্ডিকেট চক্র। এই চক্র বন্দরে অবস্থানরত বিভিন্ন জাহাজ থেকে জ্বালানি তেলসহ মূল্যবান মালামাল চুরি করার পর এবার নেমেছে বন্দরে জাহাজ চলাচল নির্ণয়কারী নেভিগেশন বয়া চুরির কাজে।
সম্প্রতি বন্দর চ্যানেলের বঙ্গবন্ধু চর সংলগ্ন এলাকার একটি নেভিগেশন বয়া চুরি করে কেটে আনার ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। আবুল কালাম আজাদ ওরফে ডুবুরি কালামের বিরুদ্ধে এই নেভিগেশন বয়া চুরির অভিযোগ উঠেছে। ডুবুরি কালামের ‘খানজাহান আলী’ নামে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগের প্রদত্ত ও তালিকাভুক্ত স্যালভেজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ডুবুরি কালামের নির্দেশ ও সহায়তায় ওই নেভিগেশন বয়া কেটে আনায় নিয়োজিত শ্রমিক মো. হারুন মোল্লা জানান, সপ্তাহখানেক আগে ডুবুরি কালাম তাকেসহ তার লোকজনকে (লেবার) ২৫ হাজার টাকার চুক্তিতে বন্দর চ্যানেলের বঙ্গবন্ধু চর এলাকায় পাঠান। সেখান থেকে নেভিগেশন বয়া ও বয়া স্থাপনের লোহার মোটা চেইন কেটে আনা হয়। এ বয়ার চেইন এরইমধ্যে বিক্রি করে ঢাকায় চালান করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তবে আবুল কালাম আজাদ ওরফে ডুবুরি কালাম বলেন, আমি ওই এলাকায় ডুবন্ত রেক উত্তোলনে লোক পাঠিয়েছিলাম, কোনো নেভিগেশন বয়া কাটার জন্য পাঠাইনি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ জানায়, নেভিগেশন বয়া মূলত একটি চ্যানেলের বাম পাশে স্থাপন করা হয়। কারণ এ বয়া জাহাজ চলাচলের ঝুঁকিমুক্ত নির্ধারিত রুট ও বিপদের অবস্থান চিহ্নিত করে থাকে। আর এ বয়া দেখেই মূলত বিদেশি জাহাজ নিরাপদে বন্দরে আগমন-নির্গমন করে থাকে। যদি এই বয়া না থাকে তাহলে জাহাজ চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি থাকে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, মোংলা বন্দর চ্যানেলের বঙ্গোপসাগরে ১০ নম্বর বয়া মিসিং আছে। তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, লোকমুখে বন্দর চ্যানেলের বয়া চুরির ঘটনা শুনেছি, তবে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আবু হোসাইন সুমন/এফএ/জেআইএম