আইন-আদালত

রিভিউ খারিজ, আইনজীবীকে দিতে হবে লাখ টাকা জরিমানা

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে ইসির গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জে করা রিট খারিজের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে রিটকারী আইনজীবী এম এ আজিজ খানের জরিমানার আদেশ বহাল পুনর্বিবেচনার আবেদনও খারিজ করে দেন আদালত। অপরদিকে রিটকারী আইনজীবীকে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

Advertisement

বেঞ্চের অপর ৫ বিচারপতি হলেন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।

আদালতে রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ আজিজ খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন। শুনানিতে আরও ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন।

রিটকারী আইনজীবীকে দুই সপ্তাহের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। তবে জরিমানার এ অর্থ কোথায় বা কাকে দিতে হবে তা উল্লেখ করা হয়নি।

Advertisement

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, খরচ হিসেবে জরিমানার এক লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে লিভ টু আপিলকারীকে বলা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদ শূন্য ঘোষণা ও নির্বাচন নিয়ে করা রিট খারিজের পর আপিলের রায় পুনর্বিবেচনা করেন রিটকারী আইনজীবী।

এর আগে ১৮ মে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য ঘোষণা ও নির্বাচন নিয়ে করা রিট খারিজের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে অযৌক্তিকভাবে রিট করায় আইনজীবী এম এ আজিজ খানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।

ওইদিন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নিজেই। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।

Advertisement

রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। এ প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে ৭ মার্চ একটি রিট করেন এম এ আজিজ খান। রিটে নতুন করে নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রপতি পদ খালি রাখা নিশ্চিতের আর্জি জানানো হয়।

রিট আবেদনে আজিজ খান বলেন, ২০০৪-এর ধারা ৯ অনুযায়ী মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগ করা যাবে না। কারণ, তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন অবসরপ্রাপ্ত কমিশনার। এরমধ্যে রাষ্ট্রপতির পদটি লাভজনক।

রিটে আরও বলা হয়, মো. সাহাবুদ্দিন ২০০৪ সালের দুদক আইনের ৯ ধারা অনুসারে কর্মাবসানের পর কোনো কমিশনার প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে নিয়োগ হতে পারবেন না।

ইসি বলেছে, ‘নির্বাচিত’, ‘নিয়োগ’ নয়, যা আইনের ভুল ব্যাখ্যা। ‘নিয়োগ’ ও ‘নির্বাচিত’ সমার্থক শব্দ- এ যুক্তিতে রিটটি করা হয়েছিল।

রিটের বিষয়ে মার্চে আইনজীবী এম এ আজিজ খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতি বাছাই প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হয়নি। বাছাই ঠিকমতো হলে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হতো না। কারণ তিনি দুদকের সাবেক কমিশনার। দুদক আইন ২০০৪ এর ৯ ধারা অনুসারে দুদকের সাবেক কমিশনার লাভজনক কোনো পদে অধিষ্ঠিত হতে পারেন না। এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়নি।

এফএইচ/জেডএইচ/