১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল, আজ বর্তমান সরকারও একই কায়দায় মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শাহাদাত বলেন, আজও একইভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য আওয়ামী সরকার পুলিশ দিয়ে হামলা করে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড করে দিয়েছে। আগামী ৭ জানুয়ারি শত কোটি টাকা নষ্ট করে নির্বাচন কমিশন আরেকটি জালিয়াতির নির্বাচন করতে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে অটোপাস নির্বাচন এবং ২০১৮ সালে রাতের ডাকাতির পর এবার আরেকটি ভাগাভাগির ডামি নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন শুধু প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে দেওয়া তালিকানুযায়ী বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করবে। গণভবন থেকে যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে, তা নির্বাচনের রাতেই পড়ে শোনানো হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও উৎসবমুখর পরিবেশের পরিবর্তে সারাদেশে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিএনপির সক্রিয় নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিচার বিভাগের মাধ্যমে বেছে বেছে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের লোকজন ছাড়া মানুষ এখন গ্রেফতারের ভয়ে পলাতক এবং অনেক গ্রাম মানুষহীন হয়ে পড়েছে। বর্তমান সরকার ১৯৭১ সালের হানাদার বাহিনীর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
এসময় ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর থেকেই অগণতান্ত্রিক শক্তি দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব দুর্বল করেছে। আজ আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন এখন একটি কৌতুক, প্রহসন এবং ব্যবসার মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কারণ জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করার ক্ষমতা হারিয়েছে। আসন বণ্টনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সহানুভূতি ও করুণায় জনপ্রতিনিধি তৈরি করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিরাতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। এভাবে মাফিয়া সরকার নির্বাচন করতে যাচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের নামে এই খেলা কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে বানচাল করা হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. কামরুল ইসলামের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল করিম, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সদস্য সচিব ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহনওয়াজ, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক, চট্টগ্রাম জেলা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, এ্যাবের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সেলিম মো. জানে আলম।
এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, হারুন জামান, জসিম উদ্দিন শিকদার, নিয়াজ মো. খান, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, অ্যাডভোকেট আবু তাহের, অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান, বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল্লাহ বাহার, কেন্দ্রীয় মহিলাদলের যুগ্ম সম্পাদক ফাতেমা বাদশা, কোতোয়ালী থানা বিএনপির সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, ডবলমুরিং থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাদশা মিয়া, আকবর শাহ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাঈনুদ্দীন চৌধুরী মাঈনু, ইপিজেড থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিন মাহমুদ, চান্দগাঁও থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া প্রমুখ।
ইকবাল হোসেন/বিএ/এমএস