ঐকমত্যের বাজারে যা কিছুই কিনবেন তার মূল্য পাঁচ টাকার বেশি নয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এমন বাজারের খবর শুনে অনেকের চোখ কপালে উঠতে পারে। তবে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে নীলফামারীতে এমন স্বল্পমূল্যে বাজার করার সুযোগ পাচ্ছেন অসহায় মানুষ।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) শহরের আশা কমিউনিটি সেন্টারে ২০০ অসহায় দুস্থ মানুষকে বাজার করার সুযোগ দেওয়া হয়। বেলা ১১টার দিকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ। এ সময় স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত থেকে সবার মাঝে বাজার বণ্টন করেন।
বাজারে ঘুরে দেখা যায়, পাঁচ টাকায় একটি মুরগি ও বড় মাছ, এক টাকায় এক কেজি চাল, পাঁচ টাকায় দুই লিটার সয়াবিন তেল, তিন টাকায় এক কেজি চিনি, দুই টাকায় মসুর ডাল এক কেজি, এক টাকায় এক কেজি লবণ, সুজি এক টাকা, আটা তিন টাকায় দুই কেজি, এক টাকায় এক কেজি ছোলা, দুই টাকায় ১২টি ডিম, একটি শার্ট/কাপড় ১ টাকা, একটি কম্বল ৪ টাকাসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০টি আইটেম পাওয়া যাচ্ছে। একজন ব্যক্তি ১৩ টাকার বাজার করতে পারছেন।
ঐকমত্যের বাজারে আসা বেশিরভাগ মানুষই অসহায় ও দুস্থ। কথা হয় পঞ্চপুকুর এলাকার মেরিনা বেগমের সঙ্গে। তার বয়স ৬৭ বছর। মানুষের বাসায় কাজ করেই সংসার চলে তার।
কেমন লাগছে জানতে চাইলে মুখে হাসি নিয়ে তিনি বলেন, ‘১৩ টাকায় এতলা বাজার দিবে মুই বুঝাই পাউ নাই। এলা এতলা বাজার মুই একলা মানুষ কেমনে নিয়ে যাম। একসঙ্গে কোনোদিন এতলা বাজার করু নাই জীবনে। এমহরা যে ১৩ টাকায় এতলা বাজার দিল আল্লাহ এমাহর ভালো করুক।’
৫ টাকার এ হাট থেকে বাজার করে আরও অনেকে তাদের আনন্দ প্রকাশ করেছেন। ৫ টাকার হাটে ১৩ টাকায় এতগুলো পণ্য পাওয়া যায় এটা সাধারণ খেটে খাওয়া অসহায় মানুষগুলো বিশ্বাসই করতে পারছেন না। এতগুলো বাজার পেয়ে যেন তাদের আজ ঈদের আনন্দ।
বাজার করতে আসা জমিরন বেওয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘১০ টাকায় এতলা বাজার দিছে। আইজ বেটি জামাইক মোবাইল করে আসিবা কহিম। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেটি জামাইক ভালো মন্দ খাওয়াবা পারু না। আইজ ১০ টাকায় এত কিছু পাইছু, এলা বেটি জামাইক ডাকে দাওয়াত খাওয়াম মুই।’
বাজার বণ্টনের কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী রাহমা জামান ইচ্ছা বলেন, এখানে ছিন্নমূল অসহায় মানুষকে অল্প টাকায় বাজার দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
আয়োজন নিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, আমাদের এখানে যে প্রতীকী দাম রাখা হয়েছে তা এক টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ টাকা পর্যন্ত। দরিদ্র মানুষ এখানে মোট ১৩ টাকার বাজার করতে পারেন। বিভাগীয় শহরগুলোতে শেষ করে বর্তমানে সব জেলায় আমরা এ আয়োজন করছি।
এনআইবি/জেআইএম