পাবনার সাঁথিয়ায় নৌকার প্রার্থী ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টা ও সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সাঁথিয়া পৌর সদরে দুই দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৪টার দিকে সাঁথিয়া পৌর সদরের বোয়ালমারী বাজারে অধ্যাপক আবু সাঈদের নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সেখান থেকে ট্রাক প্রতীকের পক্ষে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি সাঁথিয়া আওয়ামী লীগ অফিস অতিক্রম করে থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় নৌকার সমর্থকরা হামলা চালান। এতে মিছিলে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাঈদের অন্তত ১০ জন সমর্থক আহত হন।
এ ঘটনার আধা ঘণ্টা পর বেড়া থেকে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা একটি মিছিল নিয়ে সাঁথিয়া পৌর সদরের দিকে আসছিল। বোয়ালামারী বাজার অতিক্রম করার সময় মিছিলটির ওপর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা পাল্টা হামলা চালান। এতে অন্তত ৫ জন নৌকা প্রার্থীর সমর্থক আহত হন। তাদের সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে চেয়ার টেবিল ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেছেন বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা খোকন অভিযোগ করে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের ট্রাক প্রতীকের পক্ষে মিছিলকারীরা থানার সামনে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঢুকে হামরা চালিয়েছে। তারা বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর ছবিসহ চেয়ার টেবিলসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় দলীয় কার্যালয়ের অফিস সহায়ক এনামুল হককে (৩৫) মারধর করে তারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আলী খাঁন জানান, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি জানতে পেরেছেন পার্টি অফিসে হামলা হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিস্তারিত জানাতে পারবেন।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাঈদের জনসভায় সভাপতিত্ব করা সাবেক মেয়র মিরাজুল ইসলাম প্রামানিক জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে কোনো কারণ ছাড়াই নৌকার সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর জনপ্রিয়তা দেখেই পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়েছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, নৌকার প্রার্থী ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈদের সমর্থকরা পাল্টাপল্টি হামলা চালিয়েছেন। উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার আলপনা ইয়াসমিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাতুল হক ও থানা পুলিশ আওয়ামী লীগ কার্যালয় পরিদর্শন করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার আলপনা ইয়াসমিন বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থী ও সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি। এর ব্যতয় ঘটলে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এফএ/এমএস