পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করায় ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) কোম্পানি আমরা টেকনোলজিসের প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যান্ডউইডথ ব্লক করে দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ফলে এ প্রতিষ্ঠানের অধীন সব ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের (আইএসপি) গ্রাহকরা ইন্টারনেট ব্যবহারে ধীরগতি সমস্যায় পড়তে পারেন।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, আমরা টেকনোলজিসের কাছে বিটিআরসির ২২ কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে। অন্তত ১০ কোটি টাকা দিয়ে তাদের বাকি টাকা কিস্তিতে দিতে হবে। তবে আমরা টেকনোলজিস কয়েকটি কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যান্ডউইথ ব্লকের নির্দেশনা দিয়ে বিটিআরসি একটি চিঠি দিয়েছে। চলতি সপ্তাহে দেওয়া চিঠিতে বিটিআরসি জানিয়েছে, ১০ কোটি টাকা ডাউন পেমেন্ট দিলে এ ব্লক প্রত্যাহারের সুযোগ দেওয়া হবে। আর বাকি ১২ কোটি ৬৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ১৮টি কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। কিস্তি প্রতি মাসের ২০ তারিখে দিতে হবে।
এছাড়া কিস্তির সঙ্গে বার্ষিক লাইসেন্স ফি এবং ২০২৩ সালের সর্বশেষ প্রান্তিক থেকে রেভিনিউ শেয়ারিংও নিয়মিত পরিশোধ করতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে। বিলম্ব ফিও ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কোনো কিস্তি, চলতি রেভিনিউ শেয়ারিং ও লাইসেন্স ফির টাকা যদি সময়মত না দিতে পারে, তাহলে শতভাগ ব্যান্ডউইথ ব্লক করে দেওয়া হবে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার প্রতিষ্ঠানটির কাছে বড় অংকের টাকা পাবে। সরকারকে অবশ্যই পাওনা আদায় করতে হবে। এজন্য সবকিছুই বিবেচনায় আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি।
জানা গেছে, বিটিআরসির নিয়ম অনুযায়ী-আমরা টেকনোলজিস যদি পাওনা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে বিটিআরসি সেখানে প্রশাসক বসাবে।
তবে এ নিয়ে জানতে আমরা টেকনোলজিসের অফিসিয়াল নম্বরে কয়েক দফা কল করা হলেও রিসিভি হয়নি।
এর আগে আইআইজি কোম্পানির কাছ থেকে বকেয়া আদায়ে ব্যান্ডউইডথ সেবা সীমিত করে দিয়েছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস কোম্পানি (বিএসসিপিএলসি)।
সেসময় বিএসসিপিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা কামাল আহম্মদ জাগো নিউজকে জানিয়েছিলেন, চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের বড় অংকের পাওনা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি পাওনা আমরা টেকনোলজিস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। তারা অনেক ব্যান্ডউইথ নিয়েছিল। টাকার অঙ্কে সেটা প্রায় ৬০ কোটি। কিন্তু তারা কোনো সাড়াই দিচ্ছে না। ৬০ কোটির জায়গায় এখন তারা পাঁচ কোটি টাকাও দিতে চাইছে না। তাদের বকেয়া আদায়ে কিছুই করতে পারছে না বিএসসিপিএলসি।
দেশে ৩৪টি লাইসেন্সধারী আইআইজি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আইআইজি ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজিট প্রোভাইডারের কাজ করে অর্থাৎ, ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডউইথ শুধু আইআইজিই ট্রানজিট করবে। তারা আইএসপি ও মোবাইল অপারেটরদের দেবে। যাদের থেকে গ্রাহকেরা সরাসরি ইন্টারনেট সেবা পেয়ে থাকেন।
বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী দেশে আইএসপি ও পিএসটিএন ইন্টারনেট গ্রাহকের পরিমাণ ১০.৯৯ মিলিয়ন এবং মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক ১২৫.৫২ মিলিয়ন।
এএএইচ/এমআইএইচএস