লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের দুই মেম্বারের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রফিক উল্যাহ নামের এক ভূমিহীনকে খাসজমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা ও তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে করা মামলায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
রোববার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কমলনগর) আদালতের বিচারক ভিক্টোরিয়া চাকমা এ আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহর ছেলে ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল্লাহ এবং একই পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নিজাম।
সন্ধ্যায় আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) প্রদীপ শীল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নুরুল্লাহ এজাহাভুক্ত আসামি ছিলেন। পরবর্তী সময়ে মামলার তদন্তে নিজামের নামও এজাহারভুক্ত হয়। তারা আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। এসময় আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদী রফিক চরকাদিরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ চরকাদিরা গ্রামের বাসিন্দা।
এজাহার সূত্র জানায়, রফিক ভূমিহীন। এতে তাকে দক্ষিণ চরকাদিরা মৌজার দিয়ারা খতিয়ানের ৪৭৭ দাগে ৫ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত দেয় সরকার। আরও কিছু জমিসহ প্রায় ১৭ বছর ধরে তিনি সেখানে বসবাস করে আসছেন। পাশেই ৯৪৫ দাগে আরও ৩২ শতাংশ জমি বন্দোবস্তের জন্য তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। মামলার প্রধান আসামি আজিজুল হকসহ অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে ওই জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করে আসছেন। ওই জমিতে থাকতে হলে তারা রফিকের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট ঘটনাস্থল গিয়ে তারা চাঁদা দাবি করেন। প্রতিবাদ করলে তাকে ওইদিন মারধর করা হয়। পরে তার ঘরে থাকা এনআইডি কার্ড ও বয়স্ক ভাতার বই নিয়ে যান তারা। পরবর্তী সময়ে ঘটনাটি ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল্লাহকে জানান রফিক। ঘটনাটির বিচার করবেন জানিয়ে ইউপি মেম্বার নিজাম উদ্দিনসহ কয়েকজনের মাধ্যমে রফিকের কাছ থেকে অলিখিত নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে সই নেন। একই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সালিসি বৈঠকেই অভিযুক্তরা বাদীর সঙ্গে তর্ক শুরু করেন।
একপর্যায়ে তারা বাদীকে চাঁদা না দিলে শান্তিতে থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দেন। এসময় বাদীকে গ্রামছাড়াসহ খুন করার হুমকিও দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গতবছরের ১৬ অক্টোবর পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে মামলা করা হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে মোবাইলফোন রেখে বাড়িতে চলে গেছেন বলে জানান সেখানে দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি।
কাজল কায়েস/এসআর/জিকেএস