জাতীয়

সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বড় বিজয়

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত ছিল। নির্বাচন কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের নামে ভিসানীতি, শ্রমিক অধিকার নীতি প্রয়োগের হুমকি দিয়ে আসছিল। অবাধ নির্বাচন নয়, সরকার পরিবর্তনই তাদের লক্ষ্য ছিল। তবে এ নির্বাচন সুষ্ঠভাবে হয়ে যাওয়ায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি বড় রাজনৈতিক বিজয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মেনন এসব মন্তব্য করেন।

ভোটারদের নগণ্য উপস্থিতি নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করলেও গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করে না বলেও মন্তব্য করেন মেনন।

এসময় মেনন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর স্বাভাবিক সহযোগী ছিল বিএনপি-জামায়াত। তারা দেশের অভ্যন্তরে সরকার পতনের আন্দোলনের নামে সব ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করার প্রয়াস নিয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে তাদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছিল।

Advertisement

বিএনপি জামায়াতের আগুন সন্ত্রাস, ট্রেনে মানুষ পুড়িয়ে মারা, রেল লাইন উপড়ে ফেলাসহ নানা জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনটি হয়ে যাওয়া দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র এবং অসাংবিধানিক ধারার বিরুদ্ধে বিশেষভাবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক বিজয়। তবে এ কথা সত্য যে নির্বাচন সম্পর্কে জনমানুষের যে অনাস্থাবোধ তা দূর করা যায়নি। কালোটাকার প্রভাব, বিশেষ সংস্থার নিয়ন্ত্রণ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্ব, শহরাঞ্চলগুলোতে ভোটারদের নগণ্য উপস্থিতি নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ন করেছে। কিন্তু তা কোনোক্রমেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করে না।

উপজেলা নির্বাচনের জামানত পূর্ণ বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, এবারের নির্বাচন রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও এটি একটি নতুন অভিজ্ঞতা। উপজেলা নির্বাচনও উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এর প্রতিক্রিয়ায় নতুন কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা জন্ম নেবে কি না সেটা দেখার।

তিনি বলেন, আমাদের সামনে সাম্প্রতিক পাকিস্তানের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। পাকিস্তানের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘লন্ডন ষড়যন্ত্র’ বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশের নির্বাচনকেও একই পরিণতি বহন করতে হতো।

তিনি বলেন, এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা। এটা একইভাবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনের ১১টি প্রধান প্রতিশ্রুতির প্রথম প্রতিশ্রুতি। বাজার সিন্ডিকেট না ভাঙার কোনো কারণ নেই। কারণ কারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সরকারের তা জানা। অন্য দলকে এ ব্যাপারে দোষ দিয়ে লাভ নেই। নিজের মানুষের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

Advertisement

মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের অবশ্যম্ভাবী প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের ওপর পড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানবতা থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হলেও তারা আজ বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার প্রতি প্রত্যক্ষ হুমকিতে পরিণত হয়েছে। মায়ানমারের গৃহযুদ্ধের অবশ্যম্ভাবী প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের ওপর পড়ছে। কোনো একক দলের পক্ষে এটা মোকাবিলা সম্ভব নয়। প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ সংগঠিত করা। শত্রু সাম্রাজ্যবাদ-মৌলবাদ। এ ব্যাপারে কোনো দ্বিধা থাকলে এখনই ঝেড়ে ফেলুন। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ জয়ী হবেই।

আইএইচআর/এমআইএইচএস/এমএস