ওখানে ছিল তমাল গাছ,অসংখ্য রাঁধালতার ফুলবাঁশের বেড়ার শেফালির সুখের ঘর,নারিকেল গাছের চিরল পাতার ফাঁকে রুপালি থালার চাঁদ।
ওখানে ছকিনার মাটির বাড়ির সামনে একটা উঠান ছিলউঠানের সাজিনা গাছে পাখিরা কিচিরমিচির করতোছোট্ট খোকা মা মা করে সারা আঙিনাজুড়ে নেচে বেড়াতো।
ওখানে কানাইবাবুর বাড়ির সামনে একটা গাঙ ছিলমাছেরা খেলতো মুক্তমনে, সাজু আর রাজু বসে বসে মাছের খেলা দেখতো। তরী বেয়ে ভাটিয়ালি গান করতো দুলাল মাঝি।
গাঙের পাড়ে শীতের দিনে রমেশবাবুর বউ মিষ্টি রোদে মেলে দিতো ভেজা চুল।পাড়ার ষোড়শী মেয়ে-বউরা মিলে হাসি-ঠাট্টা, গল্প, রসিকতায় সেলাই করতো নকশি কাঁথা।
নিষ্ঠুর নরপিশাচরা কেড়ে নিলো সব সুখ, সব শান্তি। হায়েনার হিংস্র থাবায় রচিত হলো এক কালো অধ্যায়,মায়ের বুকে অঙ্কিত হলো রক্তাক্ত মানচিত্র।
ফিরিয়ে দিলো মহামারি, দুর্ভিক্ষ আর লাশের পাহাড়বৃক্ষের শাখায় লাশ, পানিতে লাশ, নদীতে লাশ!পানি-কাদায় জড়াজড়ি, মাখামাখি, গলাগলি করে পড়েছিল তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ-শিশুর নিষ্প্রাণ দেহ।
ওই যে পাহাড় এখন দেখছো, সে দাঁড়িয়ে আজও সাক্ষী দেয়, ক্ষুধায় ক্লান্ত কাকেরা লাশের পর লাশ রেখে তৈরি করেছিল লাশের পাহাড়।
এসইউ/এমএস