ফিচার

যৌনকর্মীরাই টার্গেট, ৯৩ খুন করেছেন এই সিরিয়াল কিলার

বিশ্বের ইতিহাসে এক ভয়ংকর ও নির্মম অধ্যায় তৈরি করেছেন মানসিক বিকারগ্রস্ত একদল মানুষ। যাদের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে সিরিয়াল কিলার। যারা ঠান্ডা মাথায় একের পর এক হত্যা করে গেছেন। বেশিরভাগ সময়ই নিরীহ মানুষ তাদের পৈশাচিক আচরণের শিকার হয়েছেন।

Advertisement

তেমনই এক ভয়ংকর ও কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার স্যামুয়েল লিটল। ৯৩ টি খুন করে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইয়ের খাতায় ‘সবচেয়ে ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। হত্যার পর তাদের মৃতদেহ এমনভাবে লুকাতেন যে অনেকের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

স্যামুয়েল যাদের খুন করেছেন তাদের শরীরে কোনো ক্ষতচিহ্ন থাকত না। আর তার শিকারের বেশিরভাগই এমন নারী যারা মাদক সেবন করতেন কিংবা দেহব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। স্যামুয়েলের হাতে খুন হওয়া এমন ব্যক্তিও আছেন যার মৃত্যুর কারণ এখনো জানতে পারেননি মার্কিন গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন

Advertisement

গয়নার লোভে সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠেন বাঙালি বধূ!

স্যামুলের জন্ম ১৯৪০ সালে আমেরিকার ওহিওতে। হাইস্কুলের গণ্ডি পেরিয়েই লেখাপড়া বাদ দিয়ে দেন স্যামুয়েল। এরপর দোকানলুট বা চুরি করেই আয় করতেন তিনি। তবে তা মোটেই পরিবারের ভরণপোষণের জন্য নয়। সব টাকা খরচ করতেন মদ্যপান, মাদক সেবনে।

১৬ বছর বয়সেই পুলিশের খাতায় তার প্রথম নামে ওঠে। ১৯৭০ সাল থেকে ২০০৫ সাল, অর্থাৎ ৩৫ বছরে তার হাতে খুন হয়েছেন ৯৩ জন। ১৯৫৬ সালেই প্রথম জেলে গিয়েছিলেন স্যামুয়েল। তখন অবশ্য তার নামের আগে সিরিয়াল কিলার তকমা লাগেনি। তখন স্যামুয়েলের অপরাধ বলতে ছিল লুট, জালিয়াতি।

আশির দশকের শুরুতে স্যামুয়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে মিসিসিপি ও ফ্লোরিয়াড নারী হত্যার। কিন্তু মৃতদেহে নেই কোনো ক্ষতচিহ্ন। প্রমাণের অভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়নি স্যামুয়েল লিটল। এরপর একই পদ্ধতিতে আরও কয়েকটি খুন করেন। বারবার পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে স্যামুয়েল লিটল।

২০১৪ সালে তাকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই গ্রেফতার করে তাকে। তখন কারাগারে বসেই নিজের কৃতকর্মের কথা শোনান আমেরিকার ‘সবচেয়ে ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার।’ খুন হওয়া যেসব ব্যক্তির পরিচয় পুলিশ খুঁজে বের করতে পারেনি, তাদের নাম-পরিচয় জানায় স্যামুয়েল। জেরায় স্বীকার করে নেয় ৫০-এর বেশি খুন করেছে সে। তবে এফবিআইয়ের খাতায় তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ৯৩।

Advertisement

২০১৪ সালে সাজা ঘোষণা হয় স্যামুয়েলের। তখন তাকে ৩ দফায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেন মার্কিন বিচারকরা। কিন্তু ৬ বছর সাজা ভোগ করেই মারা যান স্যামুয়েল। ২০০৫ সালে খুন করা বন্ধ করার পরও পুলিশের নাগালে আসেনি তিনি। অভিনব পদ্ধতিতে খুন করায়, একাধিক ঘটনায় খুনের কারণই খুঁজে বের করতে পারেননি গোয়েন্দারা। যে কারণে স্যামুয়েল ছিলেন একেবারেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

কেউ কেউ মনে করেন প্রাক্তন মুষ্টিযোদ্ধা স্যামুয়েল এমনভাবে খুন করত, যেখানে ছুরি বা বন্দুকের প্রয়োজনই পড়ত না। ফলে একাধিক ঘটনার মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে আসত মাদক সেবন বা দুর্ঘটনার তত্ত্ব। ৯৩ টি খুনের একাধিক মৃত্যুর কারণ যেমন ধোঁয়াশায়, তেমনই স্যামুয়েলের মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, কিছুদিন হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে ভোগেন স্যামুয়েল এবং এসব শারীরিক জটিলতাই তার মৃত্যুর কারণ।

আরও পড়ুন

আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ বাক্সবন্দি বায়োস্কোপ কবে, কখন তৈরি হয়েছিল বালিশ?

কেএসকে/এএসএম