ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলার বিষয়টি আগে থেকেই সৌদি আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলোকে জানিয়েছিলেন ইরানের কর্মকর্তারা। আর বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দেয় সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাতে এ তথ্য জানায় ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ। তবে এমন দাবি জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদপত্র আল-আরাবিয়া এই তথ্য জানিয়েছে।
Advertisement
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুদিন আগেই ইসরায়েলে হামলার বিষয়টি সৌদি আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলোকে জানিয়েছিল ইরান। যাতে হামলার সময় এসব দেশ তাদের আকাশসীমা রক্ষা করতে পারে। কিন্তু সৌদি আরব ও ইউএই সেই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দেয়।
এদিকে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে সৌদি আরব নাকি ইসরায়েলকে সহযোগিতা করেছে বলেও দাবি করা হয় একটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কেএনএন নিউজ। সৌদির সরকারি ওয়েবসাইটের বরাত দিয়েই সহযোগিতার ওই কথা জানিয়েছিল ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম। তবে এসব দাবি নাকচ করে দিয়েছে সৌদি আরব।
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (১৫ এপ্রিল) ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমে সৌদি আরবের সরকারি একটি ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে ওই খবর প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, ইরানের আক্রমণ থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করার জন্য প্রতিরক্ষা জোটে অংশ নিয়েছে সৌদি আরব।
Advertisement
ওই ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, ইরানের ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সৌদি আরব নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করেছে। পাশাপাশি দেশটি ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সমন্বয়ে গঠিত সামরিক জোটকেও হামলা প্রতিরোধে সহযোগিতা করেছে।
এমন দাবির বিরুদ্ধে সৌদির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলে ইরানের হামলা ঠেকাতে সৌদির সহযোগিতার বিষয়ে যে ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, আসলে সৌদি আরবের এমন কোনো সরকারি ওয়েবসাইটই নেই।
১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন।
দামেস্কে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। তবে ইরানের ছোড়া ৯৯ শতাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করার দাবি জানিয়েছে তেল আবিব। অন্যদিকে তেহরানের দাবি, ইসরায়েলের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে সক্ষম হয়েছে তারা।
Advertisement
এদিকে, ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর পরিস্থিতি আর উত্তপ্ত করতে চায় না বলে জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। তবে ইরানের অভ্যন্তরে কিংবা বিদেশে তাদের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উপর নতুন করে হামলা চালানো হলে, তাৎক্ষণিকভাবে তার কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ইরান।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরি কানি বলেন, ইসরায়েলের যে কোনো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তেহরানের পাল্টা আক্রমণ হবে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। ইরান এবার জবাব দেওয়ার জন্য ১২ দিন অপেক্ষা করবে না; এমনকি, এক ঘণ্টাও দেরি করবে না।
সূত্র: আল-আরাবিয়া, আরব নিউজ, রয়টার্স
এসএএইচ