জাতীয়

কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুদক

ঘুস লেনদেনের অভিযোগে নিজ দপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Advertisement

সম্প্রতি সনদ বাণিজ্যের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান। অভিযোগ আছে, শামসুজ্জামান নিজে দুদকের মামলা থেকে রেহাই পেতে কমিশনের দুই কর্মকর্তাকে ডলারে ঘুস দিয়েছেন।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবর আমলে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে বলে সোমবার (২২ এপ্রিল) জানিয়েছেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।

দুদক সচিব বলেন, সনদ বাণিজ্যে দুদকের দুই কর্মকর্তা জড়িত মর্মে প্রকাশিত প্রতিবেদন কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওইসব প্রতিবেদনে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানকে অর্থের বিনিময়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য দুদকের দুই কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুনতালিকায় আরও ২৫-৩০ জন, রয়েছে দুদক কর্মকর্তার নামসার্টিফিকেট বাণিজ্যে রাঘব-বোয়ালদের নাম আসছে

বিষয়টির সত্যতা পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একজন পরিচালকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

খোরশেদা ইয়াসমীন আরও বলেন, শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ভিন্ন একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষা বের্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এক কোটি ৬২ লাখ ১৩ হাজার ৩৩৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। যা বর্তমানে বিচারাধীন। এছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির ভিন্ন একটি অভিযোগ কমিশনের অনুসন্ধানে রয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে কমিশন।

সম্প্রতি গ্রেফতার শামসুজ্জামান পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় এবং পরে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। উভয় জবানবন্দিতে সনদ বাণিজ্য ধামাচাপা দিতে কারা ও কীভাবে তার কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছিলেন তা তিনি জানিয়েছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন

কারিগরি বোর্ডের প্রকৌশলীর ৫ হাজার জাল সার্টিফিকেট বাণিজ্য গ্রেফতার আরও কয়েকজন, জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বোর্ড চেয়ারম্যানকেও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী রিমান্ডে

গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শামসুজ্জামান জানান, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক আলী আকবর তাকে নোটিশ দেন ও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর মামলা হলে রেহাই পেতে তিনি দুদকের আরেক উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসময় আবু বকর তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করার কথা জানিয়ে ৬০ লাখ টাকা দাবি করেন। শামসুজ্জামান টাকা দিলে বদলে যায় তদন্ত কর্মকর্তা।

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আরও জানান, পরবর্তী সময়ে দুদক উপপরিচালক গোলাম মাওলা তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদন দাখিলের দিনও ১০ লাখ টাকা ঘুস হিসেবে নিয়েছেন বলে শামসুজ্জামানের জবানবন্দিতে উঠে আসে।

এসএম/এমকেআর