দেশজুড়ে

মাজারের পাশে মিললো ভক্তের রক্তাক্ত মরদেহ

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মাজারের পাশে পড়েছিল রজব আলী (৫০) নামে এক মাজার ভক্তের রক্তাক্ত মরদেহ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত রজব আলী উপজেলার কালিকাপ্রসাদ এলাকার টেকের বাড়ির মৃত সিরাজ মিয়া ছেলে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালের দিকে কালিকাপ্রসাদ এলাকার পশ্চিমপাড়ার পোড়া শাহ পাগলার মাজারের পাশে তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকালের দিকে উপজেলার কালিকাপ্রসাদ পশ্চিমপাড়ার পোড়া শাহ মাজার সংলগ্ন বাঁশঝাড়ের নিচে রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রজব আলী একজন মাজার ভক্ত লোক ছিলেন। এক সময় তিনি জুতার ব্যবসা করতেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত মাজারের পাশে একটি টিনশেড ঘরে বসবাস করছিলেন। তিনি মাজারের সার্বিক বিষয়ে তদারকি করতেন।

নিহতের পরিবার সিলেটের মেন্দিবাগ এলাকায় বসবাস করেন। তার চার ছেলে রয়েছে। রজব আলী ভৈরব থেকে সিলেটে পরিবারের কাছে মাঝেমধ্যে গিয়ে থাকতেন।

স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জাহান মিয়া জানান, রজব আলী একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তার কোনো শত্রু ছিল না। সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি কে বা কারা তাকে ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে ফেলে রেখেছে।

নিহতের বড় বোন রাহতুন বেগম বলেন, রাত ১০টায় আমার ভাই আমার সঙ্গে দেখা করে গেছে। ভাইয়ের ছেড়া বালিশটা সেলাই করে দেওয়ার কথা বলেছিল। মাজারপন্থি যাদের সঙ্গে ভাই মিশতো তাদের মধ্যে যে কেউ আমার ভাইকে হত্যা করে থাকতে পারে।

নিহতের বড় ভাই জনাব আলী বলেন, রাত ১১টার দিকে আমার সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে এসেছে। বাড়িতে ভাইয়ের বসতঘর নির্মাণের জন্য আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। সকালে ভাইকে নিয়ে ছোট বোনের জামাইয়ের কাছে বাড়ি করার টাকা আনতে যাওয়ার কথা ছিল। কে বা কারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমি দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

মাজার কমিটির সভাপতি বসির উদ্দিন জানান, মাজার পন্থি যারা আছে তাদের সঙ্গেই মিশতেন রজব আলী। তাদের মধ্যেই কোনো একটি ঘটনায় রজব আলীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে পারিবারিক ও স্থানীয়ভাবে রজব আলীর কোনো শত্রু ছিল না।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ইটের এলোপাথাড়ি আঘাতে রজব আলীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও শরীরে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক সুরাতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

রাজীবুল হাসান/এফএ/এমএস