গত কয়েক সপ্তাহের তীব্র দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরমে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। জনসাধারণের পাশাপাশি পশু-পাখিদের মাঝেও অস্বস্তি বিরাজ করছে। বিশেষ করে বেওয়ারিশ কুকুর-বিড়াল ও পাখিদের পানির তৃষ্ণা মেটানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।
কারণ এখন আর আগের মতো পুকুর নেই। সেইসঙ্গে নদী-নালা, খাল-বিলও ভরাট হয়ে গেছে। এই অবস্থায় তীব্র দাবদাহের মধ্যে বেওয়ারিশ কুকুর-বিড়াল ও পাখিদের পানির তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পানির পাত্র স্থাপন করেছে নারায়ণগঞ্জের মানবিক সংগঠন টিম খোরশেদ।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ও গাছে পানির এই পাত্র স্থাপন করেন তারা। পাশাপাশি তাদের প্রতিদিনের ধারাবাহিকতায় বিশুদ্ধ পানি ও শসা বিতরণ এবং রিকশা চালকদের মাঝে টুপি বিতরণ কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।
টিম খোরশেদের সদস্য রানা মুজিব বলেন, তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আর এই দাবদাহে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার জন্য শ্রমজীবী মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি, শসা ও মাথার ক্যাপ বিতরণ করে আসছি। তারই অংশ হিসেবে টিম খোরশেদের উদ্যোগে এবার আমরা রাস্তার কুকুর-বিড়ালের জন্য পানির পাত্র স্থাপন করেছি। পাশাপাশি পাখিদের জন্য গাছের মধ্যে পাত্র স্থাপন করা হচ্ছে। যাতে করে পশু-পাখি পানির তৃষ্ণা নিবারণ করতে পারে। টিম খোরশেদের এই ধরনের কার্যক্রম চলমান থাকবে।
টিম খোরশেদের টিম লিডার ও নাসিক কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, দাবদাহ শুরু হওয়ার পর থেকেই টিম খোরশেদের পক্ষ থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে শ্রমজীবী মানুষ এবং নগরবাসীর জন্য পানি, শসা এবং রিকশাচালক ভাইদের জন্য ক্যাপ বিতরণ করে আসছি। তারই ধারাবাহিকতায় পশু পাখি বিশেষ করে কুকুর-বিড়াল ও পাখিদের জন্য পাত্র স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, কারণ এখন আর আগের মতো পুকুর নেই। আর নদী-নালা খাল-বিলও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে বেওয়ারিশ কুকুর-বিড়াল ও পাখিদের আগের মতো পানি পানের সুযোগ নেই। এই অবস্থায় আমরা পশুপ্রেমীদের পরামর্শে রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে এবং গাছে পানির পাত্র স্থাপন করছি। সেখানে নিয়মিত পানি দেওয়া হবে। যাতে করে এখান থেকে তারা পানির পান করতে পারে। দাবদাহ যতদিন থাকবে আমাদের কার্যক্রম ততোদিন চলমান থাকবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ ফারুক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, এই চলমান দাবদাহে আমরা বিভিন্ন জায়গায় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। আর বন্য পশু পাখির জন্য পানির পাত্র স্থাপন করাটা খুবই ভালো উদ্যোগ। তবে সেটা ছায়াযুক্ত জায়গায় স্থাপন করতে পারলে ভালো হয়। সকলেই যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে এলে আমরা কোনো রকম সমস্যা ছাড়াই এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবো।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এফএ/জেআইএম