জাতীয়

শিকাগোতে জিয়াউর রহমানের নামে সড়কে আপত্তি

যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম শহর শিকাগোতে একটি রাস্তার একাংশ বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে নামকরণ করার ফলে তুমুল বাকবিতণ্ডা শুরু হয়েছে। যা আদালত পেরিয়ে কূটনৈতিক ঝামেলার সৃষ্টি করছে।শিকাগো ট্রিবিউন পত্রিকার একটি রিপোর্টের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা বিবিসি জানায়, শহরের রজার্স পার্ক এলাকার নর্থ ক্লার্ক স্ট্রিট-এর একাংশকে সম্মানসূচক ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ নামকরণের প্রস্তাব শিকাগো সিটি কাউন্সিলে কোন বিতর্ক ছাড়াই অনুমোদন পায়।কিন্তু এই রাস্তা বাংলাদেশের প্রাক্তন এই রাষ্ট্রপতির নামে নামকরণের ফলে শুরু হয় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ঝগড়া, আদালতে মামলা এবং শিকাগোর মাটিতে দক্ষিণ এশিয়ার এক দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বচসার পুনরাবৃত্তি।শহরের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের অল্ডারম্যান জো মোর নামকরণকে সমর্থন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে মোর যখন ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ নামফলক উন্মোচন করার প্রস্তুতি নেন, তখন শিকাগোর মেয়র রাহম এমানুয়েলের অফিস থেকে যোগাযোগ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ দূতাবাস। জিয়াউর রহমানের নামে রাস্তার সম্মানসূচক নামকরণের প্রতিবাদ করেছেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন। তার মতে জিয়াউর রহমান এই সম্মানের যোগ্য নন। এছাড়া শেখ মুজিব হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ত বলে দাবি করেন রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দীন।  তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের পক্ষে। এছাড়া জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে একজন স্বৈরাচার এবং নিপীড়ক হিসেবে শাসন করেন এবং তাকে সম্মান দেয়া আমেরিকার মূল্যবোধের পরিপন্থী। স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসের আপত্তির কথা জানানো সত্তে¡ও জো মোর নর্থ ক্লার্ক স্ট্রিট-এর দুটো ব্লকে ‘জিয়াউর রহমান ওয়ে’ নামফলক স্থাপন করেন। শিকাগোর এক দল বাংলাদেশী নামকরণ বাতিলের সুপারিশ করে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করে। তবে মঙ্গলবার বিচারক শিকাগো সিটি কাউন্সিলের পক্ষে রায় দেন এবং মামলা প্রত্যাখ্যান করেন।মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী আল-হারুন হুসেইন শিকাগো ট্রিবিউনকে বলেন, তাঁর মক্কেলরা মামলাটি পুনরায় দায়েরের কথা ভাবছেন। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসও তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের  বিভিন্ন বড় শহরগুলোর কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখে জিয়াউর রহমান সম্পর্কে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে, যাতে অন্য কোন শহরে প্রাক্তন সেনা শাসককে শিকাগোর মত সম্মান না দেওয়া হয়।